এক বা দুই বছর নয়, দুই দশক আফগানিস্তানে কাটিয়েছে মার্কিন বাহিনী। কিন্তু ব্যর্থতার মালা গলায় নিয়ে রীতিমতো পালিয়ে আসতে হয়েছে আফগানিস্তান থেকে। তালেবানরা যখন অভিযান শুরু করে তখন মার্কিন অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ পাওয়া আফগান বাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তোলেনি। উল্টো বিনা লড়াইয়ে আত্মসমর্পণ করে।
মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যাওয়ার ৩ বছর পেরিয়েছে। এখনো বিশ্বের কোনো দেশই তালেবানি শাসনকে স্বীকৃতি দেয়নি। যদিও চীন ও রাশিয়ার মতো বড় বড় দেশ তালেবানের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। তবে এবার আফগানিস্তানে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সোভিয়েত ইউনিয়নকে টক্কর দিতে আফগানিস্তানে তালেবান তৈরি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। পাহাড়ি অঞ্চলে ঘেরা রুশ বাহিনী তালেবানের কাছে পরাজিত হয়ে আফগানিস্তান থেকে প্রাণ নিয়ে পালায়। কিন্তু মার্কিন মদদে গড়ে ওঠা তালেবান একসময় তাদের অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের দিকেই তাক করে। তখন তালেবানদের নিশ্চিহ্নের মিশন শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।
সেই মিশনে ২০ বছর কাটিয়ে দেয় ওয়াশিংটন। এতে আফগানিস্তানে যেমন মার্কিন সেনার প্রাণহানি ঘটেছে, তেমনি খরচ হয়েছে কোটি কোটি ডলার। শেষ পর্যন্ত অনর্থক প্রাণহানি আর ব্যয় কমাতে ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তান ছাড়ে যুক্তরাষ্ট্র।
যদিও তার কয়েক মাস আগে থেকেই তালেবানরা দুর্বার গতিতে কাবুলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। আফগান বাহিনীও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়। তবে ক্ষমতাগ্রহণের পর এই তিন বছরে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে আফগানিস্তানের অর্থনীতি। নানা পদক্ষেপ নিয়ে কাবুল কুড়িয়েছে প্রশংসা।
এবার আফগানিস্তান নিয়ে নতুন খেলায় মেতেছেন পুতিন। তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছেন তিনি। রাশিয়ার পার্লামেন্টে একটি আইন পাস করা হয়েছে। ওই আইনের বলে, মস্কো ঘোাষিত সন্ত্রাসী সংগঠনের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা সম্ভব হবে। এতে করে তালেবান এবং সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের পথ সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়ার পর থেকেই দেশটির ওপর নজর পড়ে রুশ প্রেসিডেন্টের। তিনি ধীরে ধীরে তালেবানদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন শুরু করেন। এমনকি গেল জুলাইয়ে বড়সড় ঘোষণা দেন পুতিন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তালেবান এখন মস্কোর একটি মিত্র।
সূত্র : আল-আরাবিয়া নিউজ
মন্তব্য করুন