বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সামরিক ড্রোন তৈরি করছে তুরস্ক। এই ড্রোনের বাজারও দিনে দিনে আরও বড় হচ্ছে, ব্যবহৃত হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্রে। ইউক্রেন যুদ্ধ, আজারবাইজান যুদ্ধ, এ ছাড়াও বিভিন্ন দেশের সামরিক অপারেশনে তুরস্ক নির্মিত ড্রোনের কার্যকারিতা সবাইকে চমকে দিয়েছে। ফলে এসব ড্রোন নিজেদের সমরাস্ত্র ভাণ্ডারে যুক্ত করতে আগ্রহী অনেক দেশ।
গত কয়েক বছরে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে ভয়ংকর বায়রাখতার টিবি-২ ড্রোন রপ্তানি করেছে তুরস্ক। এই ড্রোনের উদ্ভাবক তুরস্কের সামরিক ড্রোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বায়কার। প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি দাবি করেছে, বিশ্বের সামরিক ড্রোন বাজারের ৬৫ শতাংশই এখন তুরস্কের নিয়ন্ত্রণে।
ইসরায়েল ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ‘টেইক অফ ইস্তানবুল’ অনুষ্ঠানে বায়কারের প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা সেলজুক বায়রাকতার বলেছেন, বায়কারই এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক ড্রোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের সামরিক ড্রোন বাজারের ৬৫ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করছে তুরস্ক। আর ৬০ শতাংশই এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে বায়কার।
তিনি আরও বলেন, গত তিন বছর ধরে বায়কার বিশ্বের সবচেয়ে বড় ড্রোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বর্তমানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিন ড্রোন নির্মাতার চেয়ে বায়কার তিন গুণেরও বেশি বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
বায়কারের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘বায়রাকতার টিবি-২’ বর্তমানে সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হওয়া ড্রোন। এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৩৪টি দেশে বায়রাকতার টিবি-২’ ও আরও ১০ দেশে আকিনজি ড্রোন রপ্তানির চুক্তি করেছে বায়কার। তুরস্কের প্রতিরক্ষা উপকরণ রপ্তানি খাতের এক তৃতীয়াংশই নিয়ন্ত্রণ করছে বায়কার।
২০২৩ সালে বায়কারের রাজস্ব আয়ের ৯০ শতাংশই এসেছিল বিদেশি বাজার থেকে। কোম্পানিটি এবছর ১৮০ কোটি ডলার সমমূল্যের ড্রোন বিদেশে রপ্তানি করে। এর আগের বছর এই পরিমার ছিল ১২০ কোটি ডলার।
তুরস্কের প্রথম মনুষ্যবিহীন যুদ্ধবিমানও নির্মাণ করেছে বায়কার। এটিকে এরদোয়ানের স্বপ্নের প্রজেক্টও বলা হয়। ২০২২ সালে পরীক্ষামূলকভাবে এই মনুষ্যবিহীন যুদ্ধবিমান আকাশে উড্ডয়ন করে। সফল উড্ডয়নের পর সম্প্রতি বাণিজ্যিক ভাবে এর উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে। সেলজুক বলেন, বায়কার ভবিষ্যতের দৌড়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। গতকাল বা আজকের জন্য নয়।
উল্লেখ্য, তুরস্কের প্রতিরক্ষা ও উড্ডয়ন খাতে নির্ভরতার প্রতীকে পরিণত হয়েছে বায়কার। বর্তমানে সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ও দ্রুত উৎপাদন সক্ষমতা সম্পন্ন ড্রোন নির্মাতা হিসেবে পরিচিত তারা। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী রাশিয়ার বিরুদ্ধে বায়রাকতার টিবি-২ ড্রোন ব্যবহার করার পর এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পায়।
মন্তব্য করুন