আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের নতুন নির্দেশে নারীদের মিডওয়াইফ ও নার্সিং প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি এবং ক্লাস কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে হাজার হাজার নারী শিক্ষার্থীর শিক্ষার পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটির ৫টি পৃথক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিশ্চিত করেছে যে, তাদের ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের নারী শিক্ষার্থীরা ক্লাস চালিয়ে যেতে পারছেন না।
এ বিষয়ে বিবিসির কাছে পাঠানো ভিডিও বার্তায় এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা কেবল ব্যাগ নিয়ে ক্লাস থেকে বের হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের উঠোনে দাঁড়াতেও নিষেধ করা হয়েছে। আরেকজন জানান, আমাদের সেমিস্টার শেষ হওয়ার পথে, কিন্তু এখনো পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। আমাদের পরীক্ষার অনুমতি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
তালেবান সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা না করলেও, মন্ত্রণালয়ের দুটি সূত্র বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে, নির্দেশটি কার্যকর হয়েছে।
নারীদের শিক্ষার এই সীমাবদ্ধতা তালেবান সরকারের নারী শিক্ষা ও কর্মসংস্থানসংক্রান্ত কঠোর নীতির অংশ। এর আগে ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে কিশোরী মেয়েদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মিডওয়াইফ ও নার্সিং পেশা ছিল আফগান নারীদের জন্য হাতে গোনা কয়েকটি পেশার একটি, যেখানে তারা কাজ করার সুযোগ পেতেন। তবে নতুন এ নিষেধাজ্ঞার ফলে নারীদের চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্বপূর্ণ একটি খাতেও সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হলো।
তালেবান সরকার জানিয়েছিল, একবার পাঠ্যক্রম ‘ইসলামিককরণ’ সম্পন্ন হলে নারীদের শিক্ষার সুযোগ পুনরায় দেওয়া হবে। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
প্রশিক্ষণ বন্ধ হওয়া এসব শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। বহু শিক্ষার্থী দীর্ঘদিনের হতাশা ও কর্মহীনতার পর এই প্রশিক্ষণে যোগ দিয়ে নতুন আশার আলো দেখেছিল। কিন্তু এখন তারা আবারও অন্ধকারের মুখে পড়েছেন।
মন্তব্য করুন