সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়ে মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা আয় করছে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি চীন। এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গ দিচ্ছে পাকিস্তান। দেশ দুটি একে অন্যের পরিপূরক হয়ে কাজ করছে। জানা গেছে, চীন সমুদ্রের বুকে গড়ে তুলেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ওপেন-সি সোলার ফার্ম। এক একটি ফার্মের বিশালতা শত ফুটবল মাঠের সমান।
প্রশ্ন হলো সব সোলার ফার্ম সমুদ্রের তীরে কেন নির্মাণ করেছে চীন। কারণ দেশটিতে জমির চাহিদা অত্যন্ত বেশি। তাই ফসলি জমি নষ্ট না করে সমুদ্র তীরকে কাজে লাগাচ্ছে তারা। চীন এই সোলার ফার্মগুলোকে এমনভাবে নির্মাণ করেছে যা সমুদ্রের বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও অনায়াসে টিকে থাকতে পারবে। এজন্য তারা প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছে।
এদিকে পাকিস্তানে দিন দিন বাড়ছে নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব সৌর বিদ্যুতের চাহিদা। এই মুহূর্তে বিশ্বের যে-সব দেশে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার সবচেয়ে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে, সেসবের মধ্যে পাকিস্তান অন্যতম। এর মূল কৃতিত্ব চীনের সাশ্রয়ী মূল্যের সোলার প্যানেলের।
জার্মান ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, চলতি বছর পাকিস্তানে সৌর বা সোলার প্যানেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ পৌঁছাবে ১৭ গিগা ওয়াটে। যা দেশটির মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের এক তৃতীয়াংশ। মাত্র দু’ থেকে দেড় বছরের মধ্যে ঘটেছে এই উল্লম্ফন।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ থিংকট্যাঙ্ক সংস্থা অ্যাম্বারের বিশ্লেষক ডেভ জোনস বলেন, তার জানামতে, পাকিস্তানে যে গতিতে সোলার প্যানেল বসানো এবং সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়ছে, বিশ্বের আর কোনো দেশে এমনটা দেখা যায়নি।
মূলত পাকিস্তানের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ঘাটতি, ঘন ঘন লোডশেডিং, বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর দুর্বল অবকাঠামো এবং অতিরিক্ত দামের কারণে দেশজুড়ে ধনী-দরিদ্র সবাই ঝুঁকছেন সৌর বিদ্যুতের দিকে।আর এক্ষেত্রে তাদের প্রধান সহায় হয়ে উঠেছে চীনা কোম্পানগুলোর তৈরি সাশ্রয়ী সোলার প্যানেল। ফলে এখন পাকিস্তানজুড়ে ঘরবাড়ি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও কারখানার ছাদে সৌর প্যানেলের সমারোহ।
পাকিস্তানে 'সৌর বিপ্লব' সম্ভব হয়েছে চীনের সহজলভ্য প্রযুক্তির কল্যাণে। গেল ১৫ বছরে ইসলামাবাদ সোলার প্যানেলের দাম কমিয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। বিশ্বের শীর্ষ সোলার প্যানেল উৎপাদক চীন প্রতিবেশী দেশটিতে বেশ সস্তায় প্যানেল রপ্তানি করছে। গত চার দশকে পাকিস্তানে সবচেয়ে দামি সোলার প্যানেল এখন সবচেয়ে সাশ্রয়ী হয়ে উঠেছে।
মন্তব্য করুন