মাদকবিরোধী অভিযানের সময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুর্তাতে। তিনি জানিয়েছেন, মেয়র থাকাকালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য একটি ‘ডেথ স্কোয়াড’ (প্রাণঘাতী দল) গঠন করেছিলেন।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) তদন্তের শুনানিতে হাজির হয়ে দুর্তাতে এ কথা বলেন তিনি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দুর্তাতে বলেন, তার গঠিত প্রাণঘাতী দলটি গ্যাংস্টারদের নিয়ে তৈরি হয়েছিল। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এ প্রেসিডেন্ট বর্তমানে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে কথিত যুদ্ধ নিয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্তের মুখোমুখি রয়েছেন।
দুর্তাতে ফিলিপাইনের দাভাও নগরীর মেয়র থাকা অবস্থায় সহিংস ও বিচারবহির্ভূত পন্থায় অপরাধ দমনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। পরে তিনি বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে একইভাবে দেশজুড়ে অপরাধ দমনের উদ্যোগ নেবেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এদিকে ফিলিপাইন সরকার বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদকবিরোধী অভিযানে হাজার হাজার সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে, যা নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তদন্ত চলছে।
সিনেটের শুনানিতে দুর্তাতে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাদের তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, সন্দেহভাজনদের পাল্টা আক্রমণে উৎসাহিত করতে, যাতে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের ন্যায্যতা দাবি করতে পারে।
শুনানিতে তিনি বলেন, ‘আমার নীতিগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না। আমি ক্ষমা চাই না এবং কোনো অজুহাত দিই না। আপনি বিশ্বাস করুন বা না করুন...আমি আমার দেশের জন্য এটা করেছি। আমি মাদককে ঘৃণা করি, এটা নিয়ে কোনো ভুল করি না।’
‘ডেথ স্কোয়াড’ ছিল গ্যাংস্টারদের নিয়ে, পুলিশদের নিয়ে নয় উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, ‘যদি চান, আমি এখনো স্বীকারোক্তি দিতে পারি। আমার সাতজনের একটি ডেথ স্কোয়াড ছিল, কিন্তু তারা পুলিশ নয়, গ্যাংস্টার ছিল।’
নিজের পক্ষে সাফাইও দিয়ে দুতার্তে আরও বলেন, প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়ার পর অনেক অপরাধী আবার তাদের অবৈধ মাদক কার্যক্রম শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘যদি আরেকবার সুযোগ দেওয়া হয়, আমি সবাইকে নিশ্চিহ্ন করে দেব।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে দুর্তাতের প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হয় এবং তারপর থেকে তার মাদকবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই অভিযানে ৬,২৫২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে দাবি করছে।
মন্তব্য করুন