কদিন আগেই তাইওয়ানকে ঘিরে ধরে মহড়া চালিয়েছিল চীন। এবার চীনের একেবারে দোরগোড়ায় মহড়া চালাল তিন দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ওই মহড়ায় জাপান ও ফিলিপাইনের সামরিক বাহিনীও যোগ দিয়েছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাসিসটেন্ট ডিজাস্টার রেসপন্স বা হার্ড মহড়ায় যোগ দিয়ে সেনা ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা সিমুলেশন উদ্ধার অভিযান চালায়।
গেল ১৫ অক্টোবর ফিলিপাইনের মেরিন বাহিনী এ মহড়া শুরু করে। এতে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া। চীনকে জবাব দিতে শুরু হওয়া এই মহড়া চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। তাইওয়ানের প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দূরে ফিলিপাইনের লুজন দ্বীপের প্রতিরক্ষায় প্রায় ২ হাজার সেনা সদস্য এ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।
তাইওয়ান ১০ অক্টোবর জাতীয় দিবস উদযাপন করে। তারপরই তাইওয়ানকে ঘিরে যুদ্ধ মহড়া চালায় চীন।
তাইওয়ান জানায়, মাত্র ২৫ ঘণ্টার মধ্যে তাদের আকাশসীমার আশপাশে ১৫২টি চীনা যুদ্ধবিমান শনাক্ত করেছে তারা। ওই মহড়ার জবাবে তাইওয়ান জানায়, তারাও চীনকে জবাব দিতে প্রস্তুত আছে।
এদিকে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে সেনাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন। বেইজিং তাইওয়ানের চারপাশে বিরাট মহড়ার পর তিনি এ নির্দেশ দিয়েছেন। চীনের সংবাদমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই সপ্তাহে যুদ্ধের জন্য তাদের প্রস্তুতি জোরদার করার জন্য সৈন্যদের আহ্বান জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বেইজিং তাইওয়ানের চারপাশে বড় আকারের সামরিক মহড়ার কয়েকদিন পর।
শনিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) পিপলস লিবারেশন আর্মি রকেট ফোর্সের একটি ব্রিগেড পরিদর্শন করার সময় শি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর উচিত প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধের প্রস্তুতিকে ব্যাপকভাবে জোরদার করা এবং সৈন্যদের দৃঢ় যুদ্ধের সক্ষমতার বিষয়টি নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, সৈন্যদের অবশ্যই তাদের কৌশলগত প্রতিবন্ধকতা এবং যুদ্ধের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে চীন-তাইওয়ানের মধ্যে এত উত্তেজনা আর কখনো দেখা যায়নি। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তাইওয়ানকে ঘিরে ফেলেছে চীন। তার পদক্ষেপ হিসেবে তাইওয়ান সেনা পাঠানোর কথা জানিয়েছে।
জানা গেছে, তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীন। এতে চীনের সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী ছাড়াও রকেট ফোর্স, কোস্টগার্ড ও অন্যান্য বাহিনীও অংশ নেয়।
চীনের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেই এই মহড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা বলছে, যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান বিভিন্ন দিক থেকে তাইওয়ানের দিকে অগ্রসর হয়েছে। এ সময় তারা যৌথ আক্রমণের মহড়া চালায়। যুদ্ধ প্রস্তুতি ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ও এলাকায় ব্লকেড দেওয়া, জল ও স্থলে কীভাবে হামলা চালানো হতে পারে, তার নমুনা দেখাতেই এই মহড়ার অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য করুন