শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল সাতটায় ১৩ হাজার ৪২১টি ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু করা হয়। যা চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। তবে নতুন আইন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টের নাম জানানোর আনুষ্ঠানিক সময় আগে থেকে বলে দেওয়া সম্ভব নয়।
দুই বছর আগে গণবিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশ থেকে পালিয়ে যান। এরপর প্রথমবারের মতো দেশটিতে নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছে। এ নির্বাচন ঘিরে জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেছে। ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নেতা বাছাইয়ের সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না। এর প্রভাব ইতিমধ্যে রাস্তাঘাটে চোখে পড়ছে।
শ্রীলংকার ডেইলি মিরর জানিয়েছে, ভোর থেকে কলম্বোর বাস স্টেশনগুলোতে যাত্রীর উপপে পড়া ভিড়। তারা ভোট দিতে নিজ এলাকায় যাচ্ছেন। আশা করা হচ্ছে, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ থাকবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আনুষ্ঠানিক ফলাফল পাওয়া যেতে পারে আগামীকাল রোববার।
তবে দ্বিতীয় দফা (রান-অফ) ভোটে গড়ালে শ্রীলঙ্কাকে নতুন প্রেসিডেন্ট পেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে। দ্বিতীয় দফার নীতি দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ আইনে একজন ভোটার তিন প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। কোনো একজন প্রার্থী কমপক্ষে ৫০ শতাংশ বা এর চেয়ে বেশি ভোট পেলে, তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। আর কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় দফায় ভোট হবে।
ভোট গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগে গত বুধবার মধ্যরাতে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়। এ নির্বাচনে মোট প্রার্থী ৩৯ জন। তবে আলোচনায় সবার আগে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের নাম। তার বিপরীতে সঙ্গী জন বালাওয়েগার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা শক্ত অবস্থানে আছেন।
এ ছাড়া ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টির নেতা অনুড়া কুমার দিসানায়েক, রাজাপক্ষে পরিবার থেকে প্রার্থী হওয়া ৩৮ বছর বয়সী নমল রাজাপক্ষে, পিপলস স্ট্রাগল অ্যালায়েন্সের নুয়ান বোপেজ নির্বাচনী দৌড়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন।
প্রসঙ্গত, অদূরদর্শী নীতি আর দুর্নীতির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ২০২২ সালের শুরুর দিকে শ্রীলঙ্কায় তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ওই বছরের মে-তে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপাকসের বাসভবনে ঢুকে পড়েন। এতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন গোতাবায়া। ক্ষমতায় বসেন রনিল বিক্রমাসিংহে। অর্থনীতিকে টেনে তোলেন তিনি। বৈদেশিক ঋণে দেউলিয়া আর মন্দায় বিপর্যস্ত দেশকে অনেকটাই উদ্ধার করেন এই আইনজীবী রাজনীতিবিদ।
মন্তব্য করুন