ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে তৎপর হয়ে উঠেছে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার। মানবাধিকার ইস্যুতে কট্টরপন্থি ধর্মীয় গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত কাবুল প্রশাসনের সঙ্গে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো সম্পর্ক স্থাপন করেনি কোনো দেশ। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশে থাকা আফগান দূতাবাসগুলোকে কাবুলে প্রতিনিধিত্ব করতে বাধা দিচ্ছে তালেবান।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে জার্মানিতে থাকা তালেবানবিরোধী দুটি কনস্যুলেট সেবা বন্ধে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে আফগান সরকার। আর তাতে সায় দিতে জার্মানির ওপর চাপ প্রয়োগ করছে তারা।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, জার্মানিতে থাকা কাবুলের কূটনৈতিক মিশনের ওপর আরও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে তালেবান৷ জুলাইয়ের শেষ দিকে তালেবান জানায়, তারা ইউরোপের মাত্র পাঁচটি আফগান কূটনৈতিক মিশনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে৷ এগুলো হচ্ছে, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, বুলগেরিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্রে থাকা দূতাবাস এবং জার্মানির মিউনিখে থাকা কনস্যুলেট৷
তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ ডয়েচে ভেলেকে জানান, এই কূটনৈতিক মিশনগুলো আফগানিস্তানের নির্দেশ অনুসরণ করে এবং বিদেশে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে৷ তাদের কাজের প্রতি তালেবানের আস্থা আছে এবং এই কার্যক্রমগুলি স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হয়। এসব দূতাবাস দায়বদ্ধ এবং তালেবানের আদেশ পালন করে।
মিউনিখের কনস্যুলেট ছাড়াও জার্মানির বার্লিনে আফগান দূতাবাস এবং বন শহরে আরেকটি কনস্যুলেট আছে৷ তালেবানের ঘোষণার কারণে এখন দূতাবাস ও বনের কনস্যুলেট থেকে ইস্যু করা ভিসা এবং পাসপোর্ট আর আফগানিস্তানে স্বীকৃত হবে না৷
তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ইউরোপের বেশিরভাগ আফগান দূতাবাস তালেবানের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছে৷ তারা আফগানিস্তান থেকে অর্থ সহায়তা নেয় না৷ তবে কনস্যুলার সেবার বিনিময়ে পাওয়া অর্থ দিয়ে মিশনগুলো চলছে৷ জার্মানিতে শুধু মিউনিখ কনস্যুলেটকে তালেবান স্বীকৃতি দেওয়ায় জার্মানিতে বাস করা প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার আফগানকে কনস্যুলেট সেবা নিতে সেখানে যোগাযোগ করতে হচ্ছে৷
কাবুলের ‘ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে' উদ্দেশ্য করে ‘আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি' পাঠানোর মাধ্যমে মিউনিখে কনস্যুলার সেবা দেওয়ার বিষয়টি গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে বার্লিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ বার্লিন শুধু একটি বিষয়ে কাবুলের বিরোধিতা করেছে৷ সেটি হচ্ছে, মিউনিখ কনস্যুলেটে জার্মানি ছাড়াও ইউরোপের অন্যান্য দেশের আফগানদের সেবা গ্রহণের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল তালেবান৷
তবে বার্লিন বলেছে, এটি ১৯৬১ সালের ভিয়েনা কনভেনশনের পরিপন্থি হবে৷ এ ছাড়া আফগানিস্তানের ডি-ফ্যাক্টো সরকারের সঙ্গে ‘টেকনিক্যাল ডিসকাশন' চলার কথাও জানিয়েছে বার্লিন৷
মন্তব্য করুন