দক্ষিণ কোরিয়ায় বর্জ্যভর্তি বেলুন পাঠানো অব্যাহত রেখেছে উত্তর কোরিয়া। এবার তাদের এমন একটি বেলুন দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে প্রেসিডেন্টের দপ্তরের কম্পাউন্ডে পড়েছে। বুধবারের (২৪ জুলাই) এ ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন। তারা বলছেন, এসব বর্জ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকির উপাদানও থাকতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত এসব আবর্জনায় কোনো ক্ষতিকর উপাদান মেলেনি।
এনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট দপ্তরের কম্পাউন্ড নো ফ্লাই জোনের অংশ। এ এলাকায় কিছু উড়ানো যায় না। এরই মধ্যে হঠাৎ বেলুনটি শনাক্ত করা হয়। কিন্তু এর আগেই এর মধ্যে থাকা আবর্জনা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। একই সময়ে রাজধানীর আশপাশে অনুরূপ বেলুন উড়ে আসে।
এদিকে সিউলের প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিস এসব আবর্জনায় অত্যান্ত বিপজ্জনক পদার্থ থাকতে পারে বলে শঙ্কায় ছিলেন। তারা এর নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পাঠান। এরপর ল্যাবরেটরির রিপোর্ট স্বস্তি দেয় যে, এসবে কোনো ক্ষতিকর উপাদান ছিল না।
তবে সতর্কতা স্বরূপ সরকারি কর্মকর্তারা স্থানীয় লোকজনকে এসব বেলুন স্পর্শ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে এ ধরনের বেলুন দেখে থাকলে স্থানীয় সেনা ইউনিট বা পুলিশ স্টেশনে জানাতে বলেছে।
উত্তর কোরিয়া থেকে বর্জ্যভর্তি বেলুন পাঠানোর ঘটনা নতুন নয়। বিভিন্ন সময় দেশটি এ ধরনের কাজ করে আসছে।
বিবিসি জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এমন আচরণে সতর্কতা জারি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। তারা জানিয়েছে, ময়লা আবর্জনা নিয়ে আসা বেলুন যেন কেউ স্পর্শ না করে সেজন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া বেলুনে সন্দেহজনক পদার্থ থাকার আশঙ্কায় এগুলো থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মে মাস থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার ৯টি প্রদেশের আটটিতেই এ বেলুন পাওয়া গেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এসব বেলুন বিশ্লেষণ করে দেখছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রকাশ করা বিভিন্ন ছবিতে প্লাস্টিকের ব্যাগ বাঁধা বেলুন দেখা গেছে। এছাড়া কিছু বেলুনের চারপাশে আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে। এমনকি একটি ব্যাগের ওপর মলমূত্র লেখা শনাক্ত হয়েছে।
বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, কিছু বেলুনে পশুর মল পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনী এ ধরনের কার্যকলাপকে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে।
সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি জনগণের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এ ঘটনায় উত্তর কোরিয়া সম্পূর্ণভাবে দায়ী। আমরা দেশটিতে এমন অমানবিক কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য কঠোরভাবে সতর্ক করছি।
অতীতে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ায় লিফলেটের পাশাপাশি চকো পাইয়ের মতো নিষিদ্ধ বিভিন্ন বস্তু বেলুনে পাঠিয়েছিলেন দেশটির অ্যাকটিভিস্টরা। এরপর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এ ধরনের কাজকে অপরাধ আখ্যা দিয়ে আইন পাস করে দক্ষিণ কোরিয়া। এদিকে উত্তর কোরিয়ার বেলুনের জবাবে সীমান্তে লাউডস্পিকার বাজিয়ে জবাব দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। গত মে মাস থেকে এ ধরনের কার্যক্রমে দুই দেশের সীমান্তবর্তী মানুষই উদ্বেগের মধ্যে আছে।
মন্তব্য করুন