পশ্চিমা একক আধিপত্যের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই করছে রাশিয়া। অন্যদিকে দশকের পর দশক মার্কিন মিত্র জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য হুমকির আবহ তৈরি করে রেখেছে উত্তর কোরিয়া। কথায় কথায় রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে কিম চোখ রাঙানি দিচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেন যুদ্ধ পশ্চিমাবিরোধী দেশ দুটিকে আরও কাছে এনেছে।
সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পরপরই নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। এতে উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে আমেরিকা। তবে, প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষেত্রে এটা তাদের পুরোনো ও গতানুগতিক পদ্ধতি।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মিডিয়া সংস্থা প্রজেক্ট সিন্ডিকেটে এ বিষয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছেন ‘হেনরি এল স্টিমসন সেন্টার’-এর ‘নর্থ ইস্ট এশিয়া সিকিউরিটি স্টাডিজ’র ডিসটিংগুইশড ফেলো জোয়েল এস উইট। নিবন্ধে তিনি লিখেন, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ট্রাম্প ও কিম দুটি শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। ওই বৈঠক দুটির পর প্রকৃতপক্ষে দুই দেশের মধ্যে কয়েক দশকের দীর্ঘ দ্বন্দ্ব সমাধানের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছিল। কারণ, পরমাণু কর্মসূচিও বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কিম। কিন্তু ট্রাম্পের অধৈর্য স্বভাবের জন্য তা ভেস্তে যায়। সাবেক মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, উত্তর কোরিয়া কতটুকু পারমাণবিক কর্মসূচি অকার্যকর করবে এবং তার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে, তা নিয়ে দীর্ঘ দরকষাকষি হয়েছে।
ট্রাম্প ও কিম এ সমস্যাগুলো সমাধানের অনেকটা কাছাকাছি গিয়েছিলেন। ট্রাম্প যতটা ছাড় দিতে রাজি ছিলেন, কিমের দাবি তা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ফলে অধৈর্য চরিত্রের জন্য সুবিদিত ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের ঝগড়া বেঁধে যায় এবং আকস্মিকভাবে শীর্ষ সম্মেলনটি সংক্ষিপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অনেকে মনে করেন, ট্রাম্পের সে সময়কার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ট্রাম্পকে বৈঠক ভেস্তে দিতে উসকানি দিয়েছিলেন। তবে দিন শেষে বৈঠকটি ব্যর্থ হওয়ার জন্য সবাই কমবেশি ট্রাম্পকেই দায়ী করে থাকেন।
ওই বৈঠক যদি সফল হতো, তাহলে হয়তো আজ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার এক ধরনের সমঝোতার সম্পর্ক থাকত। আর সেটি হলে আজ পুতিনের সঙ্গে উনের সহযোগিতা চুক্তি হতো না; উনও আমেরিকার বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিতে পারতেন না।
মন্তব্য করুন