মরক্কোয় ৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের আঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ৩৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ৬২৭ জন। শনিবার সন্ধ্যায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মরক্কোর এ ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৭ জনে। এ ভূমিকম্পে দেশটির পাহাড়ি অঞ্চলের মধ্যে মারাখোসে সবচেয়ে বেশি বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। দেশটি গত ছয় দশকের মধ্যে এমন ভয়াবহতার মুখোমুখি হয়নি।
রয়টার্স জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে মারাখোস অঞ্চলের ঐতিহাসিক স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছাকাছি আমিজমিজ গ্রামে উদ্ধারকারীরা এখনো দেওয়াল ও পাথর সরিয়ে মরদেহ উদ্ধার করছেন। তবে পাহাড়ি এলাকায় নাজুক রাস্তার কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। অঞ্চলের একটি হাসপাতালের বাইরে কম্বল দিয়ে ১০টি মরদেহ সারি দিয়ে রাখা হয়েছে। এ সময়ে তাদের স্বজনেরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ আজাও নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমি যখন বুঝতে পারি যে, আমার পায়ের নিচের মাটি কাঁপছে তখন আমি আমার সন্তানকে নিয়ে দৌড়ে বের হয়ে গেলাম। কিন্তু আমার প্রতিবেশীরা বের হতে পারেনি। তারা তাদের পরিবারের কেউ বেঁচে নেই। এরমধ্যে বাবা ও ছেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া এখনো তার মা ও ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, গতকালের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল আটলাস পর্বতমালার ওকাইমেডিনের স্কি রিসোর্টের কাছে। এ জায়গাটি দেশের চতুর্থ বৃহত্তম শহর মারাকেশ থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভূমিকম্পের কারণে দেয়াল ধসে গেছে। এখানে-সেখানে ধ্বংসস্তূপ সৃষ্টি হয়েছে। আতঙ্কিত জনসাধারণ বাড়ি থেকে বের হতে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছেন। কেউ কেউ সড়কে এসে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।
ব্রাহিম হিমি নামে মারাকেশের এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, তিনি পুরাতন শহর থেকে অ্যাম্বুলেন্স বেরিয়ে যেতে দেখেছেন। ভূমিকম্পে শহরের বিভিন্ন ভবনের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এসাওইরার এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি কিংবা আতঙ্ক ছড়ায়নি। ভূমিকম্পের সময় আমরা মানুষের চিৎকারের শব্দ শুনেছি।
শুক্রবারের ভূমিকম্পের পরপর মরক্কোর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব জিওফিজিক্সের পরিচালক নাসের জাবোর জানান, এই ভূমিকম্পের পর পরাঘাতের সম্ভাবনা কম।
এর আগে সর্বশেষ ২০০৪ সালে মরক্কোয় বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ছয় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
মন্তব্য করুন