ডিআর কঙ্গোর সংঘাতকবলিত পূর্ব গোমা শহরে অস্থিরতা কিছুটা কমেছে। বর্তমানে সেখানে দুপক্ষের যুদ্ধ থামায় শান্ত অবস্থা ফিরে আসতে শুরু করেছে। তবে রুয়ান্ডার সীমান্তবর্তী গোমা শহর এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কে নিয়ন্ত্রণ করছে; তা এখনো স্পষ্ট নয়। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
রুয়ান্ডার সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহীরা গোমার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে। কিন্তু বাসিন্দারা বলছেন, কৌশলগত শহরটি এখনো বিদ্রোহী এবং সেনাবাহিনী উভয়ের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সরকারি বাহিনী এবং রুয়ান্ডার সমর্থিত বিদ্রোহীদের মধ্যে এক সপ্তাহ ধরে তীব্র সংঘর্ষের পর বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমায় যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে আরও সংঘর্ষের আশঙ্কায় এখনও শহরের উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে।
যদিও উত্তেজনা এখনও প্রবল। তবুও শহরে নতুন কোনো সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি এবং বিক্ষিপ্তভাবে গোলাগুলি বন্ধ হয়েছে। অন্যদিকে এম২৩ বিদ্রোহীরা দক্ষিণ কিভু প্রদেশের কাছে কিছু গ্রাম নিয়ন্ত্রণ করছে। যেখানে রাতেও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার জাতিসংঘ বলেছে, গোমার নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই থামেনি। ফলে কঙ্গোর পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ রয়ে গেছে। অবশ্য সেটি আগের মতো নেই। পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও শান্ত।
সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন কঙ্গোর রাষ্ট্রপতি ফেলিক্স আন্তোইন শিসেকেদি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি পূর্ব সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন। প্রাণহানির পরও আন্তর্জাতিক এবং আফ্রিকান সম্প্রদায়ের ‘নীরবতার’ নিন্দা করেছেন তিনি। এ ছাড়া রুয়ান্ডাকে বিদ্রোহীদের সমর্থন করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন কঙ্গোর রাষ্ট্রপতি।
ফেলিক্স আন্তোইন শিসেকেদি বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে তার টেলিভিশন ভাষণে বলেন, আমাদের দেশের পূর্বাঞ্চল নিরাপত্তা পরিস্থিতির অভূতপূর্ব অবনতির মুখোমুখি হচ্ছে। রুয়ান্ডার প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের এম২৩ পুতুলদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এভাবে তারা আমাদের জনগণের মধ্যে সন্ত্রাস ও জনশূন্যতার বীজ বপন করে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সংঘর্ষে গোমায় কমপক্ষে ২৫ জন, রুয়ান্ডায় ৯ জন এবং লড়াইয়ে শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া এই সপ্তাহের সংঘর্ষে ১৭ জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ১৩ জন দক্ষিণ আফ্রিকান, তিনজন মালাউইয়ান এবং একজনের জাতীয়তা জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন