বিশ্বব্যাপী বাড়ছে নারী ও শিশু নির্গহের ঘটনা। প্রতি আটজনে একজন নারী ও শিশুর মধ্যে একজন ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। আর এসব ঘটনায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। আফ্রিকার সাব সাহারা অঞ্চল।
জাতিসংঘে শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা নিয়ে প্রথমবারের মতো তথ্য প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ। যেখানে বলা হয়েছে, সাব-সাহারা অঞ্চলে সাত কোটি ৯০ লাখ শিশু ১৮ বছর পার হওয়ার আগেই যৌন সহিংসতার শিকার হন। অথ্যাৎ এ অঞ্চলে প্রতি পাঁচজনে একজনকে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়ে।
আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিভিত্তিক ইউনিসেফের শিশু বিয়ষক বিশেষজ্ঞ নানখালী মাকসুদ এ ঘটনাকে ভয়ঙ্কর বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি এ ঘটনাকে প্রজন্ম ট্রমা বলেও মন্তব্য করেন।
ইউনিসেফের এ বিশেষজ্ঞ বলেন, যৌন নির্যাতনের শিকার মেয়েদের মধ্যে যারা ট্রমায় ভুগছে তারা স্কুলে শিক্ষা নিতে সক্ষম হয়নি।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী অন্তত ৩৭ কোটি শিশু ও যুবতী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আনুপাতিক হারে তা প্রতি আটজনে একজন।
বুধবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনলাইন এবং মৌখিকভাবে যৌন নিগ্রহের শিকার নারীর সংখ্যা এর বাইরে রয়েছে। তাদের নিয়ে এ সংখ্যা ৬৫ কোটিতে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে নারী ও শিশুদের ধর্ষণের পাশাপাশি বালক ও কিশোরদের তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ২৪ থেকে ৩১ কোটি বালক ও কিশোর এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে ১১ জনের একজন শৈশবেই ধর্ষণ বা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, শিশুদের ওপর যৌন সহিংসতা আমাদের নৈতিক সচেতনতার ওপর একটি কলঙ্ক। সংঘাতময় এলাকায় এ ধরনের সহিংসতা আরও ভয়াবহ। সেখানে যুদ্ধের অস্ত্র হিাসবে এসব ঘটনাকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়েছে,সাব-সাহারা অঞ্চলে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শিশু ও নারী যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এরপর রয়েছে পূর্ব এবং দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় এশিয়া। এ অঞ্চলে সাত কোটি পাঁচ লাখ নারী ও শিশু সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এছাড়া মধ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ায় ৭ কোটি ৩ লাখ, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় ৬ কোটি ৮ লাখ, ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ার অঞ্চলে ৪ কোটি ৫ লাখ, উত্তর আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়াতে ২ কোটি ৯০ লাখ এবং ওশেনিয়াতে ৬০ লাখ নারী ও শিশু সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
২০১০ সালে ২০২২ সালের পরিসংখ্যান ব্যবহার করে এবার প্রথমবারের মতো এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউনিসেফের পরিসংখ্যান প্রধান ক্লাডিয়া ক্যাপা।
মন্তব্য করুন