পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ায় ভয়াবহ ভূমিধসে অন্তত ২২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকেই। টানা ভারি বৃষ্টিপাতের পর প্রণঘাতী এই ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। ভূমিধসের ফলে মাটির নিচে চাপা পড়েছেন শত শত মানুষ। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে। খবর আল জাজিরার।
সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভারি বৃষ্টিপাতের পর সোমবার (২২ জুলাই) ইথিওপিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের গোফা জোনে পরপর দুটি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। ভয়াবহ এই ভূমিধসে নিহতদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, গোফা জোনের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল কেনচো-শাচা এলাকায় এই ভূমিধস হয়েছে। এটি রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে এলাকাটি প্রায় ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত।
কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) জানায়, প্রথম দফায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটে সোমবার। এ সময় অনেকেই কাদামাটির নিচে চাপা পড়ে। তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে অধিবাসীরা। এরপর দ্বিতীয় দফায় ভূমিধস হয়। এতে আবারও অনেকে চাপা পড়ে। স্থানীয় যোগাযোগ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভূমিধসে এখন পর্যন্ত অন্তত ২২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৪৮ জন পুরুষ ও ৮১ জন নারী। আলেমায়েহু বাওদি নামে একজন প্রতিনিধি জানান, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সরকারি মালিকানাধীন ইথিওপিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (ইবিসি) এর আগে জানিয়েছিল, কাদা থেকে পাঁচজনকে জীবিত উদ্ধার করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসক দাগেমাউই আয়েলের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, নিহতদের অধিকাংশই ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ির বাসিন্দাদের সাহায্য করতে গিয়েছিল। দাগেমাউইর বরাত দিয়ে ইবিসি বলেছে, প্রথমটির কয়েক মিনিট পর দ্বিতীয় ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। লোকজন ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করছে এবং তাদের খাবার দিচ্ছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ফানা ব্রডকাস্টিং করপোরেটের শেয়ার করা একটি ছবিতে দেখা যায়, মাটি ধসে পড়ার পর স্থানীয় লোকজন হাত দিয়ে মাটি সরিয়ে আটকেপড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে স্বল্প মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে দেশটির ওই রাজ্যে বন্যা ও গণবাস্তুচ্যুতের ঘটনা ঘটেছে। বন্যায় বিভিন্ন অঞ্চলের ১৯ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এক হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং জীবিকা ও অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। ইথিওপিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে এর আগেও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৮ সালে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি পৃথক ঘটনায় কমপক্ষে ৩২ জন নিহত হয়েছিল।
মন্তব্য করুন