ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে যেতে সম্মতি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) হামাসের পক্ষ থেকে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মতির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
একইসঙ্গে হামাস যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলা বন্ধে চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানায়।
এদিকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের এমন সিদ্ধান্তের আগেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় বন্ধ করেছে। গত সপ্তাহে ইসরায়েল ও হামাসকে আলোচনায় গুরুত্ব দেখানোর আহ্বান জানিয়ে দেশটিতে হামাসের কার্যক্রম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
সংবাদ সংস্থা এএফপিকে এই বিষয়ে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম বলেন, ‘যদি যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাব মেনে নেওয়া হয়, তাহলে হামাস গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’
তিনি আরও জানান, হামাস যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন ও ট্রাম্পের কাছে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানাচ্ছে।
কিন্তু হামাসের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মতির প্রস্তাব দেওয়া হলেও এখনো গাজায় ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে।
পাশাপাশি লেবাননেও বর্তমানে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে। লেবাননের কর্মকর্তারা জানান, তারা যুক্তরাষ্ট্রের একটি খসড়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পেয়েছেন, যা এখন পর্যালোচনায় রয়েছে। এই প্রস্তাবের মধ্যে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই প্রস্তাবে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে সেনা মোতায়েন রাখার কথা বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে এক শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিসা জনসন বৃহস্পতিবার লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি ও হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ স্পিকার নাবিহ বেরির সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এই পাঁচ পাতার প্রস্তাবে মোট ১৩টি পয়েন্ট রয়েছে। প্রস্তাবের পর্যালোচনার জন্য স্পিকার তিন দিন সময় চেয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ফ্রান্স যুক্ত হয়েছে। যদি ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহ রাজি হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স যৌথ বিবৃতি প্রদান করবে। এদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে হামলা চালাতে চায়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহী।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এরপর ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে। এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৩ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যার অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গাজার পাশাপাশি, লেবাননেও ইসরায়েলি হামলা চলছে। লেবাননের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অক্টোবর মাস থেকে ইসরায়েলি হামলায় সেখানে ৩ হাজার ৩৮০ জন নিহত হয়েছে।
মন্তব্য করুন