ধর্মের শক্তি যেখানে রাজনৈতিক বৈরিতাকেও ছাপিয়ে যায়, সেখানে গুরুদুয়ারা দরবার সাহিব কর্তারপুর করিডর হয়ে উঠেছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এক শান্তির সেতু।
শিখ সম্প্রদায়ের পবিত্র গুরুদুয়ারা দরবার সাহিব কর্তারপুর, যেখানে শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানক তার জীবনের শেষ সময়গুলো কেটেছে। কর্তারপুর ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ।
এ তীর্থস্থান ভ্রমণের জন্য ভারতীয় শিখদের ভিসা ছাড়াই প্রবেশের সুযোগ তৈরি করেছিল কর্তারপুর করিডর চুক্তি, যা দুই দেশের মধ্যে আস্থা ও ধর্মীয় সৌহার্দ্যের এক মাইলফলক।
এ ধর্মীয় আস্থাকে সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তান সরকার কর্তারপুর করিডরের মেয়াদ আরও পাঁচ বছরের জন্য নবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো কার্যকর করা হয়েছিল। চুক্তির নবায়ন শিখ তীর্থযাত্রীদের জন্য একটি স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে। উল্লেখ্য, পাঞ্জাবের সীমান্তের ওপারেই থাকা এ পবিত্র স্থান ভারতীয় শিখদের ধর্মীয় অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু। যদিও পাকিস্তান ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের জন্য ২০ ডলার ফি ধার্য করেছে, ভারতের শিখ সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে এই ফি মওকুফের অনুরোধ জানিয়ে আসছে।
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর এ চুক্তি নবায়ন সম্পর্কে এক পোস্টে বলেন, ‘আমাদের শিখ ভাইবোনদের পবিত্র কর্তারপুর সাহিবে অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে ভারত সরকার সর্বদা বদ্ধপরিকর। আমরা খুশি যে, কর্তারপুর করিডরের চুক্তি আরও পাঁচ বছরের জন্য নবায়ন হয়েছে।’
ধর্মীয় ঐক্য ও মানবিকতার ভিত্তিতে এ করিডরের গুরুত্ব শুধু শিখ সম্প্রদায়ের জন্যই নয়, বরং ভারত ও পাকিস্তানের জন্যও।
চিরবৈরী দুই দেশের মধ্যে কর্তারপুর করিডর হলো এমন একটি প্রতীক, যা প্রমাণ করে, ধর্ম এবং আস্থা মানবিক সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করতে পারে। এমনকি দুই দেশের রাজনৈতিক জটিলতার মাঝেও।
শিখ ধর্মাবলম্বীদের জন্য কর্তারপুর করিডর হয়ে উঠেছে ধর্মীয় সম্প্রীতির এক দৃষ্টান্ত। দুই দেশের সীমান্তের কাঁটাতার যেখানে ইতিহাসের বিভাজন টেনে দিয়েছে, সেখানে এই করিডর যেন আস্থা, বিশ্বাস এবং পারস্পরিক সহযোগিতার এক শাশ্বত প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
সূত্র : এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া
মন্তব্য করুন