ইরানে ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলার পরিকল্পনা নিয়ে গত শুক্রবার দুটি গোপন নথি অনলাইনে ফাঁস হয়। প্রথমে এ তথ্য সন্দেহজনক মনে হলেও বর্তমানে বিশ্লেষকরা এগুলোকে বাস্তব বলে নিশ্চিত করেছেন। সোমবার (২১ অক্টোবর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ ঘটনায় ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ফাঁস হওয়া নথিগুলো আসলে ইসরায়েলের হামলার পরিকল্পনা নয়, বরং মার্কিন গোয়েন্দা নজরদারির স্যাটেলাইট তথ্যের ফল।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র এ বিষয়ে জানিয়েছে, নথিগুলো ফাঁস হয়েছে না কি হ্যাক হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো স্পষ্ট তথ্য নেই। নথির শিরোনামে ‘টপ সিক্রেট’ ও ‘এফজিআই’ (ফরেন গভমেন্ট ইন্টেলিজেন্স) শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে, যা মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলোর পরিচিত শিরোনাম।
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এ নথিগুলো ‘ফাইভ আইস অ্যালায়েন্স’—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল।
ফাঁস হওয়া দুটি নথি মার্কিন ন্যাশনাল জিওস্প্যাশিয়াল-ইনটেলিজেন্স এজেন্সির ১৫-১৬ অক্টোবরের গোয়েন্দা প্রতিবেদন থেকে এসেছে, যেখানে ইরানে ইসরায়েলের হামলার কৌশল বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
নথিতে দুটি এয়ার লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইল সিস্টেমের উল্লেখ রয়েছে, যার মধ্যে একটি প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরত্ব থেকে আঘাত হানতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েল পূর্বে করা মিসাইল হামলার ধাঁচে আক্রমণ পরিকল্পনা করছে, তবে এবারের মাত্রা হবে তীব্র।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে, তারা যেন ইরানের পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র ও তেল স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু না করে। এসব স্থানে হামলা হলে ইরানের প্রতিক্রিয়া ভয়াবহ হতে পারে বলে মনে করছে ওয়াশিংটন।
বিবিসির মতে, ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলো, বিশেষ করে বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী ও বাসিজ মিলিশিয়ার ঘাঁটিগুলোতে হামলার সম্ভাবনা বেশি।
প্রতিবেদনটি থেকে ইঙ্গিত মিলছে, এসব নথি ফাঁস করা হয়েছে ইসরায়েলের হামলার পরিকল্পনা বিলম্বিত করার জন্য। ইরান সম্প্রতি ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনাগুলোর দিকে লক্ষ্য করে মিসাইল হামলা করেছে, তবে ইসরায়েল এখনো পাল্টা জবাব দেয়নি।
বিশ্লেষকদের ধারণা, আসন্ন নভেম্বরের নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার পরিকল্পনা বিলম্বিত করছে এবং এই নথি ফাঁস সে কৌশলেরই অংশ হতে পারে।
মন্তব্য করুন