অপরাধের অবাধ বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ স্বল্পতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জনপ্রিয় ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের প্রধান নির্বাহী পাভেল দুরভকে। বলা হচ্ছে রুশ এ ধনকুবেরকে শনিবার প্যারিসের লো বোর্গেট বিমানবন্দরের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এমন তথ্য দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সাধারণত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় থাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের অ্যাকাউন্ট পরিচালনায় বাধা দেয় অন্য প্ল্যাটফর্মগুলো। সেখানে টেলিগ্রামে নির্বিঘ্নে বিচরণ করে তারা। শক্তিশালী এমন প্ল্যাটফর্মের কর্ণধার কে এই পাভেল দুরভ।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮৪ সালে রাশিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন ৩৯ বছর বয়সী দুরভ। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের মালিক ও প্রধান নির্বাহী তিনি। ব্যবহারকারীদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় এই ম্যাসেজিং অ্যাপটি ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক এবং উইচ্যাটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে নিজেদের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ কোটিতে নিয়ে যাওয়াও লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে তারা।
রাশিয়া, ইউক্রেন এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে টেলিগ্রাম ব্যাপক জনপ্রিয়। এছাড়া রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কো এবং কিয়েভের নেতারা এটি ব্যাপক হারে ব্যবহার করছে। কিছু বিশ্লেষক একে ‘ভার্চ্যুয়াল যুদ্ধক্ষেত্র’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
বিখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে দুরভকে একজন বিলিওনিয়র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে- তিনি ১৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের মালিক। ২০১৪ সালে রুশ সরকার পাভেল দুরবের তৈরি ‘ভিকন্টাকি’ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে বিরোধীদের যোগাযোগ বন্ধ রাখার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু এতে তিনি রাজি হয়নি। যদিও পরবর্তী সময়ে ভিকন্টাকি নামের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি বিক্রি করে দেন এবং রাশিয়া থেকে চলে যান।
রাশিয়া এবং ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ২০২১ সালে পাভেল দুরভ ফ্রান্সের নাগরিকত্ব নিয়েছেন। যদিও তিনি তার টেলিগ্রাম ম্যাসেজিং অ্যাপটি ২০১৭ সাল থেকে দুবাইতে বসে পরিচালনা করছেন।
গত এপ্রিলে মার্কিন সাংবাদিক ট্রুকার কার্লসনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দুরভ জানান, কারো নির্দেশনা মেনে কাজ করার চেয়ে নিজের মতো কাজ করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য রাশিয়া থেকে বের হয়েছেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠান টেলিগ্রামের জন্য বার্লিন, লন্ডন, সিঙ্গাপুর এবং সানফ্রান্সিস্কোতে জায়গা খুঁজছেন বলেও জানান টেলিগ্রাম সিইও।
মন্তব্য করুন