জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী বলেছেন, নির্যাতন, বৈষম্য, সংকট বা দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে প্রথম শিকার হয় নারীরা। এ ক্ষেত্রে নারীর সুরক্ষায় নারী সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (জুন ২) বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র এর ৪র্থ জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনুর সভাপতিত্বে ‘নারী পুরুষের সমতা অর্জনে কলম হোক হাতিয়ার’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সম্মেলনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা ও শোক প্রস্তাব করেন কোষাধ্যক্ষ আখতার জাহান মালিক।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকতা পেশা হিসেবে কিছু সক্রিয়তা বা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নারীর বিরুদ্ধে সকল প্রকার বৈষম্য দূর করতে নারী সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখতে হবে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে সংবাদপত্র জনমত গঠনে ভূমিকা পালন করে। তাই নারী সাংবাদিক কেন্দ্র এর সদস্যরা নারী নির্যাতন বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করে সমাজে নারী সংকটের বিরুদ্ধে জোরাল মতামত গঠন করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন। স্পিকার বলেন, গণমাধ্যম জনগণের কথা বলে। জনসচেতনতা ও জনমত গঠনে সংবাদপত্র কাজ করে থাকে। নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সদস্যরা মানসম্পন্ন এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে গণতন্ত্রের ধারা সুসংহত করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে নাসিমুন আরা হক মিনু নারী সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে ১৪টি দাবি উত্থাপন করেন। সেগুলো হলো- সকল গণমাধ্যমে সকল বিভাগে অন্তত ৩০ শতাংশ নারী সাংবাদিক নিয়োগ প্রদান, দেশ-বিদেশে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, পদোন্নতিতে নারী সাংবাদিকের সমান সুযোগ, সব রকমের বৈষম্য নিরসনে অভিযোগ তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ, প্রচলিত আইন অনুসারে প্রসূতি ছুটি নিশ্চিত, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে নারীদের জন্য টয়লেট, রেস্টরুম, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার থাকা, সকল গণমাধ্যমে শিশু দিবা যত্ন কেন্দ্র থাকা। নারীদের অফিসে যাতায়াতের জন্য নিরাপদ ট্রান্সপোর্ট, নিয়োগ, পদোন্নতি, এসাইনমেন্ট, বিট প্রদানে, প্রশিক্ষণে কোনো বৈষম্য করা যাবে না। নারী সাংবাদিকদের ছাঁটাই করা যাবে না। যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে প্রতিটি গণমাধ্যমে যৌন হয়রানিবিরোধী কমিটি গঠন করা। নারী সাংবাদিকসহ নারী কর্মচারীদের সঙ্গে সহকর্মী, সিনিয়র বা উচ্চপদস্থ পুরুষ কর্মকর্তা ও নিয়োগকর্তাদের আচরণ সংক্রান্ত একটি আচরণ বিধি সকল গণমাধ্যমে অবশ্যই থাকতে হবে। সকল প্রতিষ্ঠানে জেন্ডার নীতিমালা থাকা ও অনলাইনে নারী সাংবাদিকসহ নারীদের হয়রানি বন্ধে সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ।
মন্তব্য করুন