রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গত ৬ ফেব্রুয়ারি আদিবাসী শিশু প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ১১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এ ঘটনায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং কয়েকটি গণমাধ্যমের পক্ষপাতমূলক আচরণের বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। সেইসঙ্গে বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নিরপেক্ষ, দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, মানবাধিকারকর্মী ড. হামিদা হোসেন, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত প্রমুখ।
বিবৃতিতে ঘটনার তদন্ত নিয়ে সময়ক্ষেপণে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, প্রীতি উরাংসহ আগের সব ঘটনার পুনঃতদন্ত করে দ্রুত দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যুকে অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড বিবেচনা না করে এ মামলা অবিলম্বে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। প্রীতির পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
সেইসঙ্গে তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মৃতবৎ অবস্থায় যে শিশুটি বেঁচে আছে, তার যথোপযুক্ত চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। শিশুটির শরীরের বিশেষ ক্ষতটি পরীক্ষা করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করতে হবে।
আরও বলা হয়, ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় তিনজন শিশু গৃহসহকারী ছিল। তারা ৭, ৮ এবং ১১ বছর বয়সে কাজে যোগ দেয়। বাংলাদেশের শ্রম আইন অনুযায়ী ১৪ বছর পূর্ণ হয়নি এমন ব্যক্তি শিশু। শ্রম আইনের ৩৪ ধারা অনুযায়ী, কোনো শিশুকে কোনো পেশায় বা প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করা যাবে না। ফলে এটা একটা অপরাধ। সৈয়দ আশফাকুল হক কিংবা তার পরিবারের কোনো সদস্য শিশু যৌন নিপীড়ক কি না সে বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
প্রীতিকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে যে দারোয়ানরা উদ্ধার করতে দেয়নি, তাদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
মন্তব্য করুন