যৌন নিপীড়নের শিকার ৯০ শতাংশ ছাত্রী তার শিক্ষাজীবন নিয়ে হুমকিতে পড়াসহ বিভিন্ন কারণে অভিযোগ করেন না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি যৌন-হয়রানির ঘটনার প্রতিবাদে’ এক মানববন্ধনে এ কথা জানান বক্তারা।
হাইকোর্ট প্রণীত আদেশ অনুসারে কয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি রয়েছে। কমিটিগুলো কতটুকু কার্যকর সেটি মনিটর করারও জোর দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বন্ধে রাজনৈতিক ছত্রছায়ার প্রভাব দূর করে অপরাধকারী শিক্ষককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা। চাকরিচ্যুত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছা, রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, অতিদ্রুত হাইকোর্টের রায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়ন করাসহ এই রায়ের আলোকে একটি আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে নারী-পুরুষ সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বান জানায়।
মানববন্ধন কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম, আন্দোলন সম্পাদক রাবেয়া খাতুন শান্তি , ঢাকা মহানগর কমিটির লিগ্যাল এইড সম্পাদক শামীমা আফরোজ আইরিন এবং অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক জনা গোস্বামী।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বারবার সংঘটিত যৌন নিপীড়নের ঘটনা বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনকে চরম একটি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্বদানকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘটিত যৌন সহিংসতার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোনো আন্দোলন হতে দেখিনি।
তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নের ঘটনা প্রতিরোধে এসময় সমগ্র সমাজকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শিক্ষাঙ্গন থেকে সব দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক অপতৎপরতা বন্ধ করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। হাইকোর্টের রায় অনুসারে গঠিত যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটিকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। নারীর প্রতি অবমাননাকে সামাজিক অবমাননা হিসেবে দেখতে হবে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. দিপ্তী শিকদার।
মন্তব্য করুন