বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, কন্যাশিশুদের শিক্ষায় বিনিয়োগ হলো সেরা বিনিয়োগ। কারণ আজকের কন্যাশিশুই ভবিষ্যতের প্রজন্মের হাল ধরবে। একটি সমাজ, একটি দেশ এবং আগামীর সুন্দর পৃথিবী নিশ্চিত করতে শিক্ষার বিকল্প নেই। আমরা সুন্দর একটি পৃথিবী গড়ার পথেই ছিলাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের সময় পৃথিবীজুড়ে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, সেই জায়গা থেকে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এই সময়ে বিশ্বজুড়ে এক দশমিক ছয় বিলিয়ন কন্যাশিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে। সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য নারী শিক্ষার বিকল্প নেই।
‘কন্যাশিশুর অধিকারের জন্য বিনিয়োগ : আমাদের নেতৃত্ব, আমাদের সমৃদ্ধি’, এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বুধবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল লেকশোর হাইটসে আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে ইউনিসেফ বাংলাদেশের মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে কন্যাশিশুদের অনেক অর্জন রয়েছে। তবে এখনো তাদের বাল্যবিয়েসহ নানা প্রতিবন্ধকতার মাধ্যমে পিছিয়ে রাখা হচ্ছে। অনেক পরিবারে স্কুল না পেরোতেই মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে তাদের পেছনে বিনিয়োগ করা উচিত। সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য কন্যাশিশুর শিক্ষায় বিনিয়োগের বিকল্প নেই।
জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের সদস্য লতা মণ্ডল নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, অনেকেই ভাবেন মেয়েরা এটা পারবে না, ওটা করবে না। এভাবে ভাবা ঠিক নয়। মেয়েরা সবই পারে। মেয়েদের এগিয়ে যাবার পথে বাধা না হয়ে বরং তাদের সাহায্য করা উচিত।
দুবারের রোবট অলিম্পিক গোল্ড মেডেল জয়ী নাশীতাত যাইনাহ্ রহমান বলেন, আমার মা আমাকে প্রথম সফটওয়্যারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। লোগো দিয়ে রোবটিক বানানো শুরু করি।
সভায় দুটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে কিশোর-তরুণদের পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন। কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রামেশ সিং বলেন, শিক্ষার হার বাড়লেও বাংলাদেশে আমরা দেখছি বাল্যবিয়ের প্রকোপ কমছে না। এই জায়গায় আমাদের কাজ করার আছে। যথাযথ নেটওয়ার্কিং তৈরির মাধ্যমে জোরালো আওয়াজ তুলতে হবে। তবেই আমরা সাফল্যের পথে যেতে পারবো।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস বলেন, মৌলিক অধিকারের জায়গায় যদি নারীরা পিছিয়ে থাকে তাহলে তারা কীভাবে সুন্দর ভবিষ্যত গড়বে। নারীর পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতায়নের মাধ্যমেই সুন্দর ভবিষ্যৎ সম্ভব। বর্তমানে টেকনলজির এই বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলেও নারী ও কন্যাশিশুর ক্ষমতায়ন প্রয়োজন। প্রয়োজন শিক্ষার।
এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের ওআইসি ভিবেন্দ্র এস রাঘুবংশী, সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর বেটসিয়া জোরিও, ব্র্যাকের যুব দলের সদস্য ফারিয়া নুসরাত, পাখি আখতার প্রমুখ।
মন্তব্য করুন