রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি যেন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, নারী, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, তার জন্য সরকারের সঙ্গে একত্রে সংবিধানে মানবাধিকারের বিষয়টি নিয়ে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী এবং নিজেরা করি’র সমন্বয়ক খুশী কবির।
সোমবার (৪ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আসাদগেটে ওয়াইডব্লিউসিএ কনফারেন্স হলে বাদাবন সংঘ আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় আলোচনার মূল বিষয় ছিল নারীর ভূমির মালিকানা প্রাপ্তিতে সীমাবদ্ধতা ও করণীয়। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. ঈশানী চক্রবর্তী, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) উপনির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি।
স্থানীয় পর্যায়ে নারীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২০১৬ থেকে কাজ করে যাচ্ছে বাদাবন সংঘ। সভায় গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মুমিতা তানযীলা। গবেষণার আলোকে বক্তারা বলেন, ভূমিতে মালিকানায় অনেকটাই পিছিয়ে আছে বাংলাদেশে নারীরা, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে উত্তরাধিকার আইন থাকলেও তার বাস্তবায়ন নেই। এ ছাড়া আইনগুলো বৈষম্যমূলক, যা জাতি ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সমান নয়।
প্রান্তিক নারীদের নেত্রী পারভীন হালিম বলেন, জমির দলিল সহজবোধ্য নয়। ফলে নারীরা অধিকারপ্রাপ্তির লড়াইয়ে বেশি দূর যেতে পারে না।
ঈশানী চক্রবর্তী বলেন, ভূমিতে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করা মানে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
খুশী কবির বলেন, ভূমিতে নারীর অধিকার ধর্মীয় আইন দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে, ফলে দেখা যায় নারী ও সংখ্যালঘু মানুষরা বৈষ্যম্যের শিকার হয়। এক্ষেত্রে অভিন্ন পারিবারিক আইন করলে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, সংগঠনই শক্তি, সংগঠনই মুক্তি। তাই তৃণমূল থেকে সব পর্যায়ের নারীদের সংগঠিত করে ভূমিতে নারীর সমঅধিকার আদায়ের দাবি তুলতে হবে এবং সবার সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় একদিন বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
মন্তব্য করুন