তরুণ নারীদের ক্ষমতায়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে নারী মৈত্রীর চাকরি মেলা। মেলায় ৪০০-এর বেশি তরুণী অংশগ্রহণ করে এবং ৩০টিরও বেশি নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করে। এ উদ্যোগ শহর ও আশপাশের অঞ্চলের তরুণীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে নারী মৈত্রী, সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের উদ্যোগে চাকরি মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
চাকরি মেলায় নারী মৈত্রীর ‘তরুণ নারীর ক্ষমতায়ন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে (ওয়াইডব্লিউইই)’ প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। দুই বছরব্যাপী এই প্রকল্পের আওতায় ৭২০ তরুণীকে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি, নেতৃত্বের বিকাশ এবং ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এই প্রকল্প তরুণীদের কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব সহায়তা প্রদান করছে।
নারী মৈত্রী আমার আত্মপ্রকাশের মঞ্চ। পারিবারিক সমস্যার কারণে অনার্স পড়ার সময়ে ঢাকার বাইরে চলে যেতে হয়েছিল। সেভ দ্য চিলড্রেন, নারী মৈত্রীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কিছু প্রশিক্ষণ থাকায় ওপেডিয়ায় গ্রাফিক্সে চাকরির সুযোগ পাই। গত বছর চাকরি মেলায় অংশ নেওয়া নাহিদা আখতার তার সফলতার কথা এভাবেই তুলে ধরলেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলি, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের উপপরিচালক (কোর্স অ্যাক্রিডিটেশন) এসএম শাজাহান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিরাজ চন্দ্র সরকার, সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোয়ালিটি ডিরেক্টর রিফাত বিন সাত্তার, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও জীবিকা/শিশু দারিদ্র্য পরিচালক তানিয়া শারমিন এবং সাফ বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। তাদের উপস্থিতি তরুণ নারীদের ক্ষমতায়ন এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতার প্রতি সরকার ও বিভিন্ন সংস্থার অঙ্গীকারকে সুদৃঢ় করেছে।
শাহীন আক্তার ডলি বলেন, তরুণদের দক্ষতা ও মেধা কিভাবে বিকশিত হবে সে উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা তাদের জন্য চাকরি মেলার আয়োজন করেছি। কিভাবে চাকরির আবেদন করতে হয়, নতুন নতুন চাকরির সুযোগ পাবে, ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় কিভাবে কথা বলতে হয়- এসব তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শেখানো হয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়োগ দাতারাও যোগ্য প্রার্থী পাবেন।
ওপেডিয়া টেকনোলজিসের সিইও নাজমুল হাসান রিফাত এবং বাংলাদেশ আইটির সিইও একে মহিবুর রহমান তরুণীদের দক্ষতা এবং কর্মসংস্থানের জন্য প্রস্তুতির প্রশংসা করেন।
সেভ দ্য চিলড্রেনের নিশাত আফরোজ বলেন, আমরা যুবদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছি। ভোকেশনাল থেকে প্রায় ৭৫ শতাংশ যুব চাকরিতে যাওয়ার সুযোগ পায়।
চাকরি মেলায় ওয়ালটন, প্রান আরএফএল, ওপেডিয়া টেকনোলজিস, সিমেক, প্রিয় শপ, নিটল-নিলয় গ্রুপ, বাংলাদেশ আইটির মতো নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে। তারা সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে এবং যোগ্য প্রার্থীদের চাকরির প্রস্তাব প্রদান করে।
নারী মৈত্রী তরুণ নারীদের ক্ষমতায়ন করার জন্য অংশগ্রহণকারী নিয়োগকর্তাদের করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি পুরস্কার প্রদান করে।
এই মেলার মাধ্যমে তরুণ নারীরা উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ লাভ করেছে এবং কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহস পেয়েছে। নারী মৈত্রী বাংলাদেশের তরুণ নারীদের স্বপ্নপূরণে সহায়তা করে একটি সমতাভিত্তিক ও সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখছে।
মন্তব্য করুন