নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ১৩ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়। নারীর প্রতি সব বৈষম্যমূলক আইন দূর হবে। সমাজ হবে সমতার। নারীর প্রতি নিপীড়ন করে কেউ পার পেয়ে যাবে না ইত্যাদি বিষয়গুলোও তুলে ধরা হয়।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে নারীদের শেকল ভাঙার পদযাত্রা শীর্ষক স্লোগানে অংশগ্রহণরত নারী শিক্ষার্থী এবং সংগঠকরা পদযাত্রা শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ দাবিগুলো তুলে ধরেন। তারা এমন একটি সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে চতুর্থবারের মতো এর আয়োজন করে। রাত বারোটার দিকে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্যের প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে জড়ো হন নারীরা। এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পরে শাহবাগ থেকে মশাল মিছিল নিয়ে পদযাত্রাটি সিটি কলেজ-কলাবাগান-মানিক মিয়া এভিনিউ হয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে এসে থামে। শনিবার (৩১ আগস্ট) ভোর ৪টা পর্যন্ত এখানে অবস্থান করেন তারা।
শেকল ভাঙার পদযাত্রায় অংশগ্রহণরত শিক্ষার্থী এবং সংগঠকরা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণ বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। এছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতনবিরোধী সেল কার্যকর ও পূর্ণ বাস্তবায়ন করার দাবি জানান তারা।
বক্তারা বলেন, নারী-পুরুষের সমানাধিকার এ দেশে কেবল বইয়ের পাতাতেই সীমাবদ্ধ। আজও রাষ্ট্র একজন নারীর সুরক্ষা যথাযথ প্রয়োগ এবং নিরাপত্তা বিধানে প্রতি মুহূর্তে ব্যর্থ হয়। ধর্ষণ, যৌন হয়রানি এবং নিপীড়ন যখন দেশের প্রতিটি জেলায় নিত্যদিন ঘটে চলেছে, তখনও রাষ্ট্র অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ। এমনকি যখন ক্ষমতাসীন দলের সদস্য থেকে শুরু করে বিত্তশালী পুরুষ এবং সামরিক কর্মকর্তারা যৌনপীড়ন, ধর্ষণ ও খুনের মতো অন্যায় করে গেছে, তখন আমাদের সরকারকে তাদের অপরাধ ধামাচাপা দিতেই ব্যস্ত থাকতে দেখেছি । কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে তনু ধর্ষণ ও হত্যার ৮ বছর হলো, পুলিশ এখনো ‘সন্দেহভাজন কাউকে ধরতে পারেনি’। মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি আনভীরকে গ্রেপ্তার করা তো দূরে থাক, কখনো জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়নি । এ ধরনের ঘটনা একটা নয়, দুটো নয়, অগণিত। নারী যখন ন্যায়বিচার চায়, দ্বারে দ্বারে বিচারের আশায় ঘুরে বছর পার করে দেয়, অপরাধী ঠিকই জামিনে ঘুরে বেড়ায়।
মন্তব্য করুন