টেকসই ডিজিটাল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে পারস্পারিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিতে শেষ হলো ২৪তম দক্ষিণ এশিয়ার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের (এসএটিআরসি) সম্মেলন। পাশাপাশি ফাইভ-জি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, ব্রডব্যান্ড সংযোগ বিস্তার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে তরঙ্গ ব্যবস্থাপনা, সদস্য দেশসমূহের মধ্যে পারস্পারিক জ্ঞান ও সহযোগিতা বিনিময়, ক্রস বর্ডার ফ্রিকোয়েন্সি ইন্টারফেয়ারেন্স রোধ, স্যাটেলাইট ও টেরিস্ট্রিয়াল সেবায় তরঙ্গ ব্যবহার, টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ হয় তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে সম্মেলনের সমাপনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই আয়োজনে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৯টি দেশ তথা ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও ইরানের টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক রেগুলেটরি সংস্থার প্রধান, টেলিকম অপারেটরস, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি-বেসরকারি সংস্থার শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও এশিয়া প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটি (এপিটি) এই সম্মেলনের আয়োজন করে। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
এ সময় এশিয়া-প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটির মহাসচিব মাসানুরি কন্ডো বিটিআরসি এবং অংশগ্রহণকারী সকল সদস্যসমূহের প্রতিনিধিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ২৪তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে সদস্য দেশসমূহের টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়ন, তরঙ্গের যথাযথ ব্যবহার, টেকসই টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণে পলিসি প্রণয়ন, বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএটিআরসি’র ২৪তম সম্মেলনের কর্ম পরিকল্পনার কাঠামো বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, আঞ্চলিক এই সম্মেলন দক্ষিণ এশিয়ার সদস্য দেশসমূহের মধ্যে নবপ্রযুক্তি বিনিময়, প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পারস্পারিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থা, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে। সদস্য দেশসমূহ পারস্পারিক ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, সমৃদ্ধশালী ও উন্নত দেশ গঠনে ডিজিটাইজেশনের বিকল্প কিছু নেই। আর ডিজিটাল কানেক্টিভিটি হবে ডিজিটাইজেশনের মূল ভিত্তি। দক্ষিণ এশিয়ার ৯টি দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার মধ্যে মিল রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজিটাল ব্যবস্থার উত্তরণ ঘটিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি সম্প্রসারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সদস্য দেশসমূহের মধ্যে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি বাস্তবায়ন, প্রযুক্তিগত তথ্য আদান-প্রদান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ এশিয়ার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে এসএটিআরসি প্রতিষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য করুন