আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ও ইন্টারনেট নিয়ে দুঃসংবাদ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এবারের বাজেটে হ্যান্ডসেট উৎপাদনে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়াতে এবং টকটাইম ও ইন্টারনেটে সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে।
বর্তমানে ১৭টি প্রতিষ্ঠান হ্যান্ডসেট উৎপাদনে কর দেয় ৩ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ পর্যন্ত। আর বিক্রয়ে দিতে হয় ৫ শতাংশ। তবে আসছে বাজেটে এই কর আরও ৫ শতাংশ বাড়িয়ে মোট ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে বছরে সরকারের কয়েকশ কোটি টাকা রাজস্ব বাড়তে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সূত্রমতে, দেশে ১৯ কোটি ২২ লাখ সিমকার্ডধারী রয়েছেন। এর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১২ কোটির বেশি গ্রাহক। বর্তমানে ১০০ টাকা মোবাইল রিচার্জে গ্রাহককে কর দিতে হয় ৩৩ টাকা। ইন্টারনেট কেনার ক্ষেত্রেও একই পরিমাণ কর গুনতে হয়।
তবে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন বাজেটে উভয় ক্ষেত্রেই ৫ শতাংশ কর বাড়িয়ে মোট ২০ শতাংশ করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। এতে অতিরিক্ত কর বাড়বে ৫ টাকা ৭৫ পয়সা। ফলে মোবাইল সেবায় ১০০ টাকা ব্যবহার করলে গ্রাহককে সব মিলিয়ে কর দিতে হবে ৩৯ টাকা। যা হবে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ কর।
মোবাইল অপারেটরের তথ্যমতে, দেশে একজন গ্রাহক মাসে গড়ে সাড়ে ৬ জিবি ডেটা ব্যবহার করেন। সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়লে বছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়া যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মোবাইলের টকটাইম ও ডেটার ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়তে পারে।
অন্যদিকে, মোবাইল সেবা ও হ্যান্ডসেট উৎপাদনে কর ভার কমাতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক একটি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ইন্টারনেটের দাম এবং ভ্যাট কমানোর বিষয়টি অর্থমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং এনবিআরের চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
আগামী ৬ জুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব জাতীয় সংসদে উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থ বিভাগ সূত্র থেকে জানা গেছে, এই বাজেট হতে পারে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন