বয়স মাত্র ১৩ বছর, এই বয়সে হ্যাকিংকে ডাল ভাত বানিয়ে ফেলেন ইউরোপের এক কিশোর। পেশা হিসেবেই এটিকে বেছে নিয়েছে। শুধু অন্যের তথ্য হ্যাক করেই ক্ষ্যান্ত হয় না সে। হ্যাক করা তথ্য দিয়ে ব্ল্যাকমেল করে হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে লাখ লাখ ইউরো। এই কিশোরকে ধরতে রীতিমতো মোস্ট ওয়ান্টেড পোস্টার পর্যন্ত টাঙিয়ে দেওয়া হয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
যে বয়সে ক্লাসরুমে অথবা খেলার মাঠে থাকার কথা, সেই বয়সে কোটি কোটি টাকা কামানোর ধান্দায় বিভোর জুলিয়াস কিভিমাকি নামের এই কিশোর। রীতিমতো হ্যাকিং পেশায় নেমে পড়েছে সে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, থেরাপি নেওয়া ৩৩ হাজার মানুষের তথ্য হ্যাক করে তাদের ব্ল্যাকমেল করেছিলেন জুলিয়াস।
অবাক করা ঘটনা হলো টানা ১১ বছর ধরে এমন অপরাধ ঘটিয়েছেন জুলিয়াস। আর যখন এই কাজ শুরু করেছিলেন, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর, এখন ২৬। জুলিয়াসকে ইউরোপের অন্যতম একজন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধী ধরা হয়।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি বলছে, জুলিয়াস ৩৩ হাজার মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করেছিলেন। তারা সবাই হয় থেরাপি নিয়েছেন বা নিচ্ছেন। জুলিয়াসকে ইউরোপের কিশোর হ্যাকিং গ্যাংয়ের হোতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সম্প্রতি ফিনল্যান্ডের ওয়েস্টার্ন ইউশিমার ডিস্ট্রিক্ট আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন জুলিয়াস। গত সোমবার আদালত তাকে ৬ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এর আগে ফ্রান্সে আটক হন জুলিয়াস। পরে তাকে ফিনল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়। গত বছরের অক্টোবরে সেখানেই তার বিচার শুরু হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, ২০২০ সালেই ২৬ বছর বয়সী হ্যাকার জুলিয়াস ওই পরিষেবার কাছ থেকে ৪ লাখ ইউরো দাবি করেন। তবে ফিনল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমের দাবি, এর পরিমাণ ৪ লাখ ৫০ হাজার ইউরোর বেশি ছিল। জুলিয়াস বলেছিলেন, এ অর্থ বিটকয়েনে পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু ওই সাইকোথেরাপি কেন্দ্রটি অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এরপর জুলিয়াস হাজারো ভুক্তভোগীকে ই-মেইল করেন। প্রত্যেকের কাছে ২০০ ইউরো করে চান তিনি। বিবিসি জানিয়েছে, এমন কর্মকাণ্ডের পর অন্তত একজন ভুক্তভোগী আত্মহত্যা করেছেন।
এত এত অভিযোগের সবই অস্বীকার করেছেন জুলিয়াস। তবে ফিনল্যান্ড সরকার বলছে, আদালতে উপস্থাপন করা তথ্য-উপাত্তে জুলিয়াসের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। তার সাজাও হবে।
মন্তব্য করুন