কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রসারের কারণে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ৪১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীসংখ্যা কমানোর পরিকল্পনা করছে।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চ্যানেল সিএনএনের প্রতিবেদনে প্রকাশিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডাব্লিউইএফ) এক জরিপ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবদেনে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানের ওপর চালানো এই জরিপে দেখা গেছে, ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ৭৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কর্মীদের পুনঃপ্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা উন্নয়নে উদ্যোগ নেবে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য কর্মীদের এমনভাবে প্রস্তুত করা, যাতে তারা এআই-এর সঙ্গে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারেন।
সম্প্রতি এই তথ্যগুলো বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ‘ফিউচার অব জবস’ (চাকরির ভবিষ্যৎ) প্রতিবেদন থেকে প্রকাশ করা হয়েছে। তবে আগের প্রতিবেদনের তুলনায় এবারের প্রতিবেদনে এআইকে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তেমন ইতিবাচক হিসেবে তুলে ধরা হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এআই এবং নবায়নযোগ্য শক্তির অগ্রগতির ফলে শ্রমবাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। এর ফলে প্রযুক্তিগত এবং বিশেষজ্ঞ কাজের চাহিদা বাড়লেও, কিছু পেশার চাহিদা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে শারীরিক পরিশ্রম সংশ্লিষ্ট চাকরিগুলো দ্রুত কমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষ করে, নতুন সৃজনশীল এআই প্রযুক্তি জ্ঞানভিত্তিক কাজের ধরন পাল্টে দিচ্ছে। এটি মানুষের নির্দেশনা অনুযায়ী মৌলিক লেখা, ছবি এবং বিভিন্ন ধরণের সামগ্রী তৈরি করতে সক্ষম।
অন্যদিকে, এআই সম্পর্কিত দক্ষতার চাহিদা বাড়ছে। জরিপে দেখা গেছে, ৭০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান নতুন কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করছে, যারা এআই টুলস ব্যবহারে দক্ষ। এছাড়া, ৬২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এমন কর্মী নিয়োগ করতে চায় যারা এআই-এর সঙ্গে আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বৈচিত্র্যময় সৃজনশীল এআই প্রযুক্তি মানব দক্ষতাকে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন না করে তা আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ তৈরি করছে। ফলে মানব-মেশিন সহযোগিতা আগের চেয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
তবে, এআই ইতোমধ্যে অনেক চাকরিতে প্রভাব ফেলেছে। কিছু প্রতিষ্ঠান, যেমন ড্রপবক্স এবং ডুয়োলিংগো কর্মী ছাঁটাইয়ের পেছনে এআই প্রযুক্তির ব্যবহারকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রযুক্তির এই পরিবর্তন কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা এবং পেশাগত দৃষ্টিভঙ্গির নতুন ধারার সূচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন