সম্প্রতি নেপালে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া পাবজি মোবাইল সুপার লিগে ভালো ফলাফল করেই দেশে ফিরেছেন এ-ওয়ান ইস্পোর্টস দলের সদস্যরা। সেখানে বাংলাদেশ থেকে মোট দুটি দল অংশগ্রহণ করলেও ফাইনালে জায়গা করে নেয় শুধুমাত্র এওয়ান ইস্পোর্টস।
বাংলাদেশ ছাড়াও সেখানে অংশগ্রহণ করেছিল নেপাল, পাকিস্তান, মঙ্গোলিয়া, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, কাজাকিস্তান ও রাশিয়ার দলের প্লেয়ারগুলো।
বাংলাদেশে শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এ দেশের ইস্পোর্টস খেলোয়াড়রা এগিয়ে যাচ্ছে। যথাযথ সহযোগিতা পেলে দেশের ছেলেরা অনেক ভালো করবে বলে আশা করেন সংশ্লিষ্টরা। কাজী আরাফাত হোসেন ২০২০ সালে A1 Esports প্রতিষ্ঠিত করেন, যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইস্পোর্টস দল। এই দলটি ২০২১ সালে দুবাইতে প্রথমবারের মত পাবজি মোবাইলের নিজস্ব ওয়ার্ল্ড কাপে অংশগ্রহণ করেছিল। ইস্পোর্টস নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন এওয়ান ইস্পোর্টসের সদস্য হাসান মাহমুদ।
তিনি জানান, রিসেন্টলি তারা নেপাল থেকে পাবজি মোবাইল সুপার লিগ সিজন-২ খেলে এসেছে। ওই টুর্নামেন্ট থেকে পাবজি ওয়ার্ল্ডকাপের জন্য কোয়ালিফাই করা হয়। যেখানে পুরো বিশ্ব থেকে বিভিন্ন টিম অংশগ্রহণ করে। আর এই ওয়ার্ল্ডকাপ টুর্নামেন্টে প্রায় ৬৫০ কোটির টাকার প্রাইজ দেওয়া হয়। রিসেন্টলি তারা যেটা খেলে এসেছে ওইটার প্রাইজমূল্য ছিল ২ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ। সেখানে সেন্ট্রাল এশিয়া এবং সাউথ এশিয়ার টিমগুলো অংশগ্রহণ করে। সেখানে কয়েক হাজার টিমের মধ্যে তারা টপ-১৬তে ছিল।
হাসান মাহমুদ জানান, দেশের বেশিরভাগ বয়স্ক মানুষ পাবজি পছন্দ করেন না। কিন্তু তারা যখন কমপিটিভ লেভেলে খেলেন, তখন তাদের মাতাপিতাও সাপোর্ট করে। অনেকে মনে করে পাবজি খেলতে খেলতে ছেলে-মেয়েরা অ্যাডিকটেড হয়ে যায়, যার কারণে পাবজি ব্যান করে দেওয়া হয়। কিন্তু যারা অ্যাডিকটেড তারা এখনো খেলছে আর সমস্যায় ভুগছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ব্যান হওয়ার কারণে পাবজির অফিসিয়াল কোনো টুর্নামেন্ট আসছে না। যেটার জন্য আমরা স্পন্সরশিপও পাচ্ছি না, আমরা ইজিলি কোয়ালিফাইও করতে পারছি না। অনেক কষ্ট করে আমাদের কোয়ালিফাই করা লাগছে। পাবজি প্লেয়ার হিসেবে আমাদের একটাই চাওয়া, বাংলাদেশ থেকে পাবজি যেন আনব্যান করা হয়। আমরা অনেকগুলো টুর্নামেন্ট খেলেছি, আমরা দেশকে রিপ্রেজেন্ট করেছি। এবার দেশেও অফিসিয়াল টুর্নামেন্টে খেলতে চাই। আর পাবজি আনব্যান করা হলে আমরা দেশকে আরও বেশি রিপ্রেজেন্ট করতে পারব।
গেমিং ও ইস্পোর্টস; সিনেমা বা সংগীত ইন্ডাস্ট্রির চেয়েও অনেক বড়। এখন উপযুক্ত সময় এটা নিয়ে আমাদেরকে ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা করার। সৌদি আরবেই ই-স্পোর্টসের একটি চ্যাম্পিয়নশিপের প্রাইজমানি রাখা হয় ৬৫৮ কোটি টাকা।
বিশ্বের সব দেশ ইস্পোর্টস নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের পাশের দেশগুলো ইস্পোর্টসকে সরকারিভাবে স্বীকৃত দিচ্ছে। এমনকী মালয়েশিয়ার মতো দেশে ইস্পোর্টসকে জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাম্প্রতিক সময়ে তাদের দেশের গেমার ও ইস্পোর্টস অ্যাথলেটদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন; আগামী দিনে কীভাবে এই শিল্পটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেই বিষয়ে। জাপানের স্কুলে ইস্পোর্টসকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সুতরাং আমাদেরও এই সম্ভাবনাময় ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে যথাযথ নীতিমালার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে এবং এখনই তার উপযুক্ত সময়। সরকারের সুনজর এখানে একান্তই কাম্য বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করুন