দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও এমপিদের ভারত, চীন ও ইউক্রেন ভ্রমণের সময় ‘বার্নার মোবাইল’ ফোন ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি দেশটির ভিআইপিদেরও একই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রশ্ন জেগেছে কী এই বার্নার ফোন।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি এমন এক ধরনের মোবাইল ফোন যা দিয়ে একজন মানুষ খুব সহজেই নিজের জন্য অস্থায়ী ও বেনামি নম্বর তৈরি করতে পারেন। একবার ব্যবহারের পর ওই নম্বর ফেলে দিলেও কোনো সমস্যা হয় না। ফলে এই ফোনের টেকনিক্যাল সমস্ত ডাটা মুছে যায় চিরতরে।
দামে সস্তা এই ধরনের বার্নার ফোন কোনোরকম আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছাড়াই প্রিপেইড মিনিটসহ দোকান থেকে কেনা যায়। তবে মাঝে মাঝে কিছু অসাধু ব্যক্তি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এবং প্রতারণার উদ্দেশ্যে বার্নার ফোন কিনে থাকেন।
বার্নার মোবাইল ফোনগুলো সাধারণত পরিত্যক্ত ডিভাইস থেকে বের করে আনা হয়। বাসার বয়স্ক সদস্যরা যে ফোনগুলো ব্যবহার করে থাকেন, প্রয়োজন ফুরানোর পর সেগুলোকেই বার্নার ফোন হিসেবে রূপান্তর করা হয়ে থাকে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বার্নার ফোনের অন্যতম গ্রাহক হচ্ছে অপরাধীরা। অবৈধ কাজ করার জন্যই তারা বার্নার ফোন ব্যবহার করে থাকে, যাতে করে পুলিশ তাদের শনাক্ত করতে না পারে।
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য নাইটলি জানিয়েছে, ভিআইপিদের মোবাইল ফোন চীনা এবং রুশ হ্যাকাররা হ্যাক করতে পারে। এজন্য সতর্ক করে তাদের বার্নার ফোন ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া সরকারের রীতি হলো, ফাইভ আইজ অর্থাৎ নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যবহির্ভূত অন্য কোনো দেশে অস্ট্রেলিয়ার ভিআইপিরা ভ্রমণে গেলে তাদের মোবাইল ফোন বাড়িতে রেখে যেতে হয়। তবে ভারত, চীন ও ইউক্রেনের ক্ষেত্রে নতুন করে এ বিষয়ে জোর দিয়েছেন দেশটির গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
নিয়মিত ভারতে ভ্রমণকারী একজন বিশিষ্ট অস্ট্রেলিয়ানের বরাত দিয়ে নাইটলির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর সর্বশেষ ভ্রমণের সময় তাকে ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনের স্থলে ‘বার্নার ফোন’ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিন বছর আগেও তাদের এমন পরামর্শ দেওয়া হতো না বলেও জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তবে দেশটির কর্তাব্যক্তিরা জানিয়েছেন, কেবল নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্যই এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন