প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাপক উন্নতি সাধন করছে। নতুন নতুন উদ্ভাবনা যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এই প্রযুক্তিগুলি বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, শিল্প এবং যোগাযোগে বিপ্লব ঘটাচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে চিকিৎসা নির্ণয় এবং রোবটিক্সে উন্নয়ন হয়েছে, যা রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার কার্যকারিতা বাড়িয়েছে। এ ছাড়া ডিজিটাল নেটওয়ার্কের উন্নয়ন বিশ্বের মধ্যে দ্রুততর এবং আরও সুসংহত যোগাযোগের সুযোগ করে দিয়েছে।
প্রযুক্তিতে এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ঘাস তৈরির নতুন প্রক্রিয়া। প্রাণীর প্রধান খাদ্য হিসেবেই এই ঘাস বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর এবার প্রাণীর এ প্রধান খাদ্য নিয়েই আবিষ্কার করা হলো নতুন উদ্ভাবন, ফ্যাক্টরিং ঘাস।
বর্তমানে পশুদের জন্য যেসব প্রযুক্তি তৈরি হচ্ছে এর মধ্যে ফ্যাক্টরি পদ্ধতিতে ঘাস উৎপাদন অন্যতম। এই ঘাস প্রাকৃতিক ঘাসের তুলনায় অনেক বেশি পুষ্টিকর এবং উৎপাদনেও বেশ সহজ। জানা গেছে, উন্নত মানের প্রযুক্তির সাহায্যে এই প্রক্রিয়াটি খুব দ্রুত সম্পন্ন হয়।
বর্তমানে পশুদের খাদ্য হিসেবে এটি বহুল ব্যবহৃত বলে দিন দিন এটির পরিচিতি বাড়ছে। গবাদি পশুর খাদ্য এই ফ্যাক্টরিং ঘাস উচ্চগুণ সম্পন্ন হওয়ায় প্রাকৃতিক ঘাসের বিকল্প হয়ে উঠছে। অনেকের কাছে তাই এ ঘাসের মূল্য প্রাকৃতিক ঘাসের চেয়ে কম নয়।
এই ঘাস উৎপাদনের প্রক্রিয়াটি মূলত শুরু হয় প্রায় ৫০ কেজি বার্লির বীজ বপন করে। প্রথমেই এই বীজগুলোকে দীর্ঘ সময় ধরে পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় যেন এতে থাকা আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং এসব বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে থাকে। এরপর এই বীজগুলোকে একটি বিশেষ ট্রেতে ছড়িয়ে দিলে সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, আলো ইত্যাদি সঠিকভাবে পৌঁছানোর জন্য ট্রেতে থাকা ডিজিটাল নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে রাখা হয়। এসব পদ্ধতি অনুসরণ করার পর বীজগুলো ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
কেবল মাত্র প্রাকৃতিক ঘাসের ওপর নির্ভর না করায় এই পদ্ধতিতে ঘাস উৎপাদন করায় অনেক সময়েই এবং অধিক পরিমাণে ঘাস উৎপাদনে সক্ষম হচ্ছে এই প্রযুক্তি। অঙ্কুরিত বীজগুলো ঘাসে পরিণত হলে তা পশুদের খাওয়ার উপযুক্ত হয়। অঙ্কুরিত হওয়ার পরই এর মধ্যে সকল পুষ্টি উপাদানের উপস্থিতি পাওয়া যায় এবং ৭ দিন পর এসব ঘাস কাটার প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
এই ঘাস পশুদের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং সহজপাচ্য হওয়ায় পশুদের শারীরিক বিকাশে এর ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। জানা গেছে, প্রাকুতিক ঘাসের তুলনায় এই ঘাসে অধিক পরিমাণে প্রোটিন, খনিজ এবং ভিটামিন থাকে যা পশুদের জন্য বেশ জরুরি। প্রাকৃতিক ভাবে উৎপন্ন ঘাসের মতো এই ঘাসের জন্য মাটির উর্বরতা, পরিবেশ ইত্যাদির কথা চিন্তা করে এই প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে অনেকেই। পশু পালনে এই পদ্ধতি বেশ লাভজনকও বটে। নানান চ্যালেঞ্জের দিকে আর ভাবতে হবে না বলে অত্যন্ত কার্যকর একটি পদ্ধতি বলে বিশ্বাস করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মন্তব্য করুন