মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ ওক্সাকার ছোট শহর সান পেদ্রো হুয়ামেলুলার মেয়র ভিক্টর হুগো সোসা একটি কুমিরকে বিয়ে করেছেন।
প্রথা মেনে বিয়ের পর বধূবেশে সাজানো কুমিরটিকে সকলের সামনে চুমুও খেয়েছেন তিনি। তবে পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই কুমিরটির মুখ বেঁধে রাখা হয় দড়ি দিয়ে; হঠাৎ যাতে কাউকে কামড়ে না দেয় সেজন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কনে কুমির হলেও নাচ-গানসহ বিয়ে বাড়ির সব আয়োজনই ছিলো। বর-কনেকে শুভেচ্ছা জানাতে প্রায় অর্ধেক শহরবাসী সেখানে হাজিরও হয়েছিলেন।
কুমির কনেকে শুভক্ষণে সাদা গাউন আর গয়নায় সাজিয়ে মণ্ডপে হাজির করানো হয়। পরে বর মেয়র ভিক্টর হুগো সোসা একাধিকবার কবুল বলে বিয়েতে সম্মতি জানান।
মূলত শতবর্ষ পুরানো রীতি রক্ষায় এমন আয়োজন করে সেখানকার আদিবাসী সম্প্রদায়। প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের যোগসূত্র গড়ে তোলার মাধ্যমে প্রার্থনা করেন তারা। কামনা করেন প্রকৃতির আশীর্বাদ। আদিবাসী আয়োজনের সঙ্গে যোগ হয় খ্রিস্টান বিয়ের রীতি। সে অনুযায়ী আগে থেকে নির্বাচিত করা হয় বউয়ের একজন ‘গডমাদার’।
প্রথাটিকে ‘খুবই চমৎকার’ আখ্যা দিয়ে বিয়ের আয়োজক ও ধর্মমাতা অলিভিয়া পেরেজ বলেন, ‘এটা (কুমির) আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে এবং আমার শেকড় সম্পর্কে আমাকে গর্বিত করেছে। কনে কী পোশাক পরবে, সে বিষয়েও আমাকে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়েছে।’
এ ধরনের বিয়ের আয়োজন কেন করা হলো তার ব্যাখ্যায় বলেন, ‘আমাদের জন্য কুমির গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তিনি হলেন রাণী।’
ছোট্ট রাজকুমারীর মর্যাদা দেওয়া সাত বছর বয়সী এ প্রাণীটিকে ধরিত্রী মাতার অবতার হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন স্থানীয়রা। তাই নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন মেয়র ভিক্টর হুগো সোসা। তিনি বলেন, ‘এই বিয়ে একজন রাজকুমারী এবং একজন চাকরের মধ্যে মিলনের প্রতিনিধিত্ব করে।’
অর্থনৈতিকভাবে দরিদ্র হলেও আদিবাসী সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ মেক্সিকোর দক্ষিণের রাজ্য ওক্সাকায় নানা জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। অত্যন্ত কঠোরভাবে যারা নিজেদের ভাষা এবং ঐতিহ্য রক্ষা করে আসছে।
মন্তব্য করুন