বিমানবন্দরে কাছের মানুষকে বিদায় জানানোর সময় আবেগঘন আলিঙ্গন স্বাভাবিক দৃশ্য। কিন্তু কখনো কী ভেবেছেন, কতক্ষণ একজনকে জড়িয়ে ধরে বিদায় জানানো যায়? হয়তো কখনোই নয়। নিউজিল্যান্ডের ডুনেডিন বিমানবন্দর এবার এ আবেগের প্রকাশকে একটি সময়সীমায় বেঁধে ফেলেছে—সর্বোচ্চ তিন মিনিটের আলিঙ্গন!
ডুনেডিন বিমানবন্দরের সিইও ড্যান ডি বোনো জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসে এ নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে- যাতে বিমানবন্দরের ড্রপ-অফ এলাকায় যানজটের মতো পরিস্থিতি এড়ানো যায় এবং পরিবেশ সুশৃঙ্খল রাখা যায়।
ডুনেডিন বিমানবন্দরের ড্রপ-অফ এলাকায় নতুনভাবে লাগানো সাইনবোর্ডে লেখা আছে, ‘সর্বোচ্চ আলিঙ্গনের সময় তিন মিনিট’। যাদের বিদায়ের মুহূর্তে আরও বেশি সময়ের প্রয়োজন, তাদের বিমানবন্দরের পার্কিং এলাকায় যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেখানে বিনামূল্যে ১৫ মিনিট পর্যন্ত পার্কিং সুবিধা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বিমানবন্দরের সিইও ড্যান ডি বোনো জানান, এটি মূলত যাত্রীদের দ্রুত বিদায় জানিয়ে ড্রপ-অফ এলাকার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্যই করা হয়েছে। ‘তিন মিনিট যথেষ্ট সময় প্রিয়জনকে বিদায় জানাতে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ সময়সীমা আসলে একটি মজার উপায়ে বলা, আপনিও আলিঙ্গন করুন এবং অপরকেও করার সুযোগ দিন।
এদিকে এ নতুন পদক্ষেপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। কেউ কেউ একে মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন এবং মন্তব্য করেছেন, কেউ কীভাবে আলিঙ্গনের সময়সীমা নির্ধারণ করতে পারে? অপরদিকে কেউ কেউ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বলছেন যে ড্রপ-অফ জোনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য এটি প্রয়োজন ছিল।
উল্লেখ্য, বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীদের আলিঙ্গনের সময়সীমা কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে না। তবে দীর্ঘ আলিঙ্গন করার ইচ্ছা থাকলে তাদের পার্কিং এলাকায় গিয়ে তা সম্পন্ন করার পরামর্শ দেওয়া হবে।
বিমানবন্দরের সিইও ডি বোনো বলেন, ২০ সেকেন্ডের একটি আলিঙ্গন ইতিবাচক হরমোন যেমন অক্সিটোসিন ও সেরোটোনিন নিঃসরণে সহায়ক, যা সম্পর্কের বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করে। তবে তিন মিনিটের বেশি আলিঙ্গন করলে তা অস্বস্তিকর হতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সিইও আরও বলেন, বিমানবন্দরগুলোতে বিদায়বেলা অত্যন্ত আবেগময় হয়ে ওঠে। কিন্তু কার্যকারিতার দিকে খেয়াল রেখে এ ধরনের সীমাবদ্ধতা আরোপ করা জরুরি। আলিঙ্গনের সময়সীমা নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও এর মাধ্যমে বিমানবন্দরের কার্যক্রম আরও মসৃণভাবে চলতে পারবে এবং অন্যরাও একই অভিজ্ঞতা গ্রহণ করতে পারবে।
ডুনেডিনের এ সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনায় একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ তৈরি করার পাশাপাশি বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।
মন্তব্য করুন