বাসায় ইঁদুরের যন্ত্রণা ব্যতিক্রম কোনো গল্প নয়। এ কারণে মানুষে ইঁদুরে যুদ্ধ যেন সন্ধি করেও থামে না। যখন কোনোভাবেই আর পেরে না ওঠে, তখন ইঁদুর দমনে বিড়ালকে ব্যবহার করা হয় ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে। অথচ সেই ইঁদুরের সঙ্গেই গড়ে উঠেছে মানুষের প্রেম।
মানুষ একা থাকতে পারে না। অবাক বিষয় হলো কেবল মানুষই নয়, সঙ্গ চায় ইঁদুরের মতো প্রাণীরাও। তাদেরও আছে বন্ধু। সে বন্ধুত্ব আবার যার তার সঙ্গে নয়, তাদের চোখে দানবাকৃতির মানুষের সঙ্গেই। যেখানে মানুষ দেখলে পালিয়ে বাঁচে ইঁদুর, সেখানে মানুষে ইঁদুরের বন্ধুত্ব যেন ছাপিয়ে গেছে সবকিছু।
কামাল মিয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে রয়েছে তার ছোট ব্যবসা। ফুটপাতে পাটি বিছিয়ে বিক্রি করেন নানা রঙের মালা। প্রতিদিন যা আয় হয়, তা দিয়েই খেয়ে পরে বেঁচে আছেন কোনোমতে। তার সঙ্গেই গড়ে উঠেছে ইঁদুরের সখ্যতা।
কামাল মিয়া যেখানে বসে ব্যবসা চালান, তার পাশেই রয়েছে কিছু ইঁদুর। রাস্তার পাশের গর্ত ও ড্রেনের ভেতরেই তাদের বাস। কামাল মিয়াও সেটি লক্ষ্য করেছিলেন প্রথম দিন থেকেই। প্রাণীপ্রেমী এই মানুষটি প্রায় প্রতিদিনই সেই গর্তে রেখে আসতেন খাবার। একসময় ইঁদুরগুলোও নিয়ম করে সে খাবার নিতে শুরু করল।
তিনি কালবেলাকে বলেন, আমি প্রতিদিনই ইঁদুরগুলোকে খাবার দিই। আগে গর্তের মুখে খাবার রেখে আসতাম। তবে এখন সখ্যতা বেড়ে ওঠায় আস্থা জন্মেছে আমাদের। তাই এখন আর খাবার রেখে আসি না। আমার ডাক শুনলেই তারা চলে আসে এবং হাত থেকে খাবার নিয়ে খায়।
এদিকে, তিনি তার বন্ধুত্ব সীমাবদ্ধ রাখেননি ইঁদুরের ভেতরে। ছড়িয়ে দিয়েছেন অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যেও। চড়ুই, শালিক, কাঠবিড়ালিসহ আরও অনেকেই কামালের ভালোবাসায় মুগ্ধ।
কামাল মিয়ার মতে, অভয় পেলে যে কোনো প্রাণীর সঙ্গেই সখ্যতা সম্ভব। তেমন প্রাণীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সব প্রাণীর জন্য এই পৃথিবী হয়ে উঠুক অভয়ারণ্য।
মন্তব্য করুন