মৌসুমের প্রথম বড় ম্যাচের উত্তাপে কৌতূহল বাড়িয়েছে মোহামেডান তিন বিদেশি উড়িয়ে আনায়। উত্তাপ-কৌতূহলের ছিটেফোঁটাও টার্ফের লড়াইয়ে খুঁজে পাওয়া গেল না। মোহামেডানকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিল মেরিনার ইয়াংস ক্লাব। আরেক ম্যাচে ঊষা ক্রীড়াচক্রকে উড়িয়ে দেওয়া আবাহনী জিতল ৬-২ গোলে।
মোহামেডানের হার ও আবাহনীর জয়ে দুই দলকে মুখোমুখি দাড় করাচ্ছে। ক্লাব কাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে আবাহনী-মোহামেডান। আরেক সেমিফাইনালে মেরিনার্সের প্রতিপক্ষ ঊষা ক্রীড়াচক্র। দুটি সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল।
অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস ও নিউজিল্যান্ডের তিন খেলোয়াড় নিয়ে ম্যাচ শুরু করেছিল মোহামেডান। অন্যদিকে মেরিনার্স খেলেছে তিন ভারতীয় খেলোয়াড় নিয়ে। ম্যাচের শুরু থেকে পরিকল্পিত হকি খেলে মেরিনার্স অষ্টম মিনিটে লিড নিয়েছিল। ভারতীয় রিক্রুট প্রদীপ মোরের ফিল্ড গোলে লিড নেওয়ার পর সমতায় ফিরতে খুব বেশি সময় নেয়নি মোহামেডান। নিউজিল্যান্ডের চার্ল উলরিচের পেনাল্টি কর্নার গোলে স্কোরলাইন ১-১ করে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। উত্তেজনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া ম্যাচ অবশ্য মেরিনার্সের দিকে ঝুঁকতে সময় নেয়নি। স্কোরলাইন ১-১ হওয়ার পরের মিনিটে মঈনুল ইসলাম কৌশিকের ফিল্ড গোলে ফের এগিয়ে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মেরিনার্স।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে মিলন হোসেনের ফিল্ড গোলে ব্যবধান বড় করে মেরিনার্স। ৩৭ মিনিটে সোহানুর রহমান সবুজের পেনাল্টি কর্নার গোলে স্কোরলাইন ৪-১ হয়। শেষ কোয়ার্টারে মঈনুল ইসলাম কৌশিক দলের শেষ গোল করেন (৫-১)।
খেলোয়াড়দের স্বাধীনতা দেওয়ায় আয়েশি এ জয় এসেছে—দাবি মেরিনার্স কোচ মামুনুর রশীদের। সাবেক এ তারকা কালবেলাকে বলছিলেন, ‘এ ম্যাচের আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত ছিল। এ কারণে আমি ছেলেদের বলেছি, তোমরা নিজেদের মতো করে ম্যাচটা উপভোগ করো। তারা অনেক রিলাক্স হকি খেলেছে। এটাই ম্যাচে দুই দলের মাঝে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে।’
বাংলাদেশ পুলিশকে হারিয়ে মৌসুম সূচনার আসরে পথচলা শুরু হয়েছিল মেরিনার্স, মোহামেডান দুই দলের। ২০০৯ সালে সর্বশেষ ক্লাব কাপ শিরোপা জয়ী মোহামেডান পুলিশকে হারিয়েছে ৫-১ গোলে। মেরিনার্সের জয় ছিল ২-০ ব্যবধানে। একটি করে জয়েই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়েছিল দুই দলের।
গ্রুপের ভাগ্য লিখে দেওয়া ম্যাচে পরিকল্পনার দিকেও এগিয়ে ছিল মেরিনার্স। সেটা দলটির খেলাতেও স্পষ্ট হয়েছে। এ সম্পর্কে কোচ মামুনুর রশীদ বলেছেন, ‘শুটিং-সার্কেলের দুই দিকে প্রচুর ফাঁকা জায়গা ছিল। সেগুলো ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল আমাদের। প্রদীপ ও দীপক ফ্লিক করে সেখানে বারবার বল ফেলেছিল। সে বলগুলো কাজেও লাগিয়েছি আমরা।’
দ্বিতীয় ম্যাচের ৩১ মিনিটে রাকিবুল হাসান রকির ফিল্ড গোলে এগিয়ে যায় আবাহনী। ৩৫ মিনিটে আব্রাহাম বেলিমঙ্গারের ফিল্ড গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয় (২-০)। ৩৭ মিনিটে যুবরাজ বলমিকির ফিল্ড গোলে ব্যবধান ৩-০ করে আবাহনী। ৪০ মিনিটে মাহবুব হোসেনের ফিল্ড গোলে ব্যবধান ৩-১ করে ঊষা। ৪৩ মিনিটে পেনাল্টি কর্ণার গোলে আবাহনীকে আরও এগিয়ে দেন আশরাফুল ইসলাম (৪-১)। ৪৮ মিনিটে মাহবুব হোসেনের পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে করা গোলে ফের ব্যবধান কমায় ঊষা (৪-২)। ৫১ মিনিটে আবাহনী আব্রাহাম দলের পঞ্চম এবং নিজের দ্বিতীয় করেন (৫-২)। ৫৫ মিনিটে পিসি থেকে ম্যাচের শেষ গোলটি করেন আবাহনীর ডিফেন্ডার ফরহাদ আহমেদ শিতুল (৬-২)।
মন্তব্য করুন