মেলবোর্নের রড লেভার অ্যারেনায় রাতের আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে নোভাক জোকোভিচের বিজয়ের গর্জন যেন টেনিস দুনিয়ায় নতুন করে অনুপ্রেরণা ছড়াল। ৩৭ বছর বয়সী এই সার্বিয়ান তারকা ইনজুরি, বয়স এবং র্যাঙ্কিংয়ের বাধা পেরিয়ে স্প্যানিশ তরুণ কার্লোস আলকারাজকে ৪-৬, ৬-৪, ৬-৩, ৬-৪ সেটে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছেন।
প্রথম সেটের শেষে একটি গুরুতর গ্রোইন ইনজুরিতে পড়েন জোকোভিচ। কোর্টের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিলেও ইনজুরি তাকে থামাতে পারেনি। বরং, আক্রমণাত্মক খেলায় ফিরে এসে তিনি ম্যাচের লাগাম নিজের হাতে তুলে নেন। এই জয় তার ২৫তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপার পথে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
জোকোভিচ বলেন,
‘আমি জানতাম, ইনজুরি থাকলেও আমাকে নিজের সেরাটা দিতে হবে। প্রতিটি পয়েন্টের জন্য লড়াই করেছি, এবং এই জয় আমার জন্য বিশেষ।’
২১ বছর বয়সী স্প্যানিশ তারকা কার্লোস আলকারাজ এই ম্যাচে ইতিহাস গড়ার আশায় ছিলেন। ক্যারিয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম সম্পূর্ণ করার দৌড়ে তার বয়স কম হওয়ায় তিনি ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে এই ম্যাচে জোকোভিচের অভিজ্ঞতা এবং দৃঢ় মানসিকতা তাকে ছাপিয়ে গেল।
ম্যাচের সময় আলকারাজ একাধিকবার হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং চেষ্টা করেও ম্যাচের গতি নিজের দিকে ঘুরিয়ে আনতে পারেননি। তবে ম্যাচ শেষে জোকোভিচের সঙ্গে নেটের কাছে উষ্ণ করমর্দন এই লড়াইয়ের প্রতি তাদের পারস্পরিক সম্মানের প্রমাণ।
এই জয়ের ফলে জোকোভিচ এগিয়ে গেলেন সেমিফাইনালে, যেখানে তার প্রতিপক্ষ জার্মানির দ্বিতীয় বাছাই আলেক্সান্ডার জভেরেভ। এই ম্যাচটি শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে, এবং টেনিস ভক্তদের জন্য এটি হবে আরেকটি রোমাঞ্চকর লড়াই।
জোকোভিচ ইতিমধ্যেই পুরুষদের এককে ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে সমান করেছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি মার্গারেট কোর্টের সর্বোচ্চ শিরোপার রেকর্ড। এবার তার সামনে ২৫তম শিরোপা জয়ের হাতছানি। এই জয়ের মাধ্যমে তিনি আরও একবার প্রমাণ করলেন, বয়স তার জন্য কেবলই একটি সংখ্যা।
ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করে, তরুণ তারকার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে নোভাক জোকোভিচ দেখিয়ে দিলেন কেন তিনি ইতিহাসের অন্যতম সেরা টেনিস খেলোয়াড়। তার এই জয় কেবল তার ভক্তদের নয়, সমগ্র টেনিস দুনিয়ার জন্য এক অনুপ্রেরণার গল্প। এখন, সেমিফাইনালে তিনি কি আরও একবার ইতিহাস গড়তে পারবেন, সেটাই দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন