সকল বাঁধা পেরিয়ে টানা ১৮ বছর পর বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে বল গড়িয়েছে। রোববার (১০ নভেম্বর) জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে রাজশাহী সবুজ দলকে ৩৪ রানে হারিয়েছে রাজশাহী লাল দল।
শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে লাল দলের ছুড়ে দেওয়া ১৪০ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ১৮ দশমিক ৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় সবুজ দল। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রান আসে শফিউল ইসলাম সুহাসের ব্যাট থেকে। ১৯ বলে ৪ ছক্কা ও এক চারে তিনি এই রান করেন। লাল দলের রিমন হোসেন ৩টি এবং একরামুজ্জামান ২টি উইকেট শিকার করেন।
রোববার দিনের একমাত্র ম্যাচে টস জিতে রাজশাহী সবুজ দল রাজশাহী লাল দলকে ব্যাট করতে পাঠালে লাল দল নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে করে ১৩৯ রান। দলের পক্ষে নাঈম আহম্মেদ অপরাজিত ৩৮ রান করেন। সবুজ দলের ফরহাদ রেজা, রনি এবং নাঈম জুনিয়র একটি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে বেলা ১১টায় জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মাদ আশরাফুল, তামিম ইকবাল এবং জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
এ সময় জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, এই মাঠে আমাদের অনেক স্মৃতি রয়েছে। এই মাঠেই আমরা জয় পেয়েছিলাম। এখানকার দর্শকরাও অনেক ভালো।
এ সময় টুর্নামেন্ট কমিটির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বাবু, সদস্য সচিব দেবব্রত পাল, টুর্নামেন্টের উপদেষ্টা মীর শাহে আলম, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, হাবিবুর রহমান হাবিব, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন এবং শহীদ চান্দুর ভাই এবং চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ পরিবারের একজন সদস্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিপুল সংখ্যক দর্শক গ্যালারিতে বসে খেলাটি উপভোগ করেন।
আয়োজক কমিটি এবং দর্শকদের পক্ষ থেকে আবারও শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ভেন্যু করার জোর দাবি জানানো হয়।
টুর্নামেন্টে ৮টি জেলার ২০টি দল অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে সবুজ দলে রয়েছে রাজশাহী, রাজশাহী মহানগর, পাবনা, নাটোর ও চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা। লাল দলে রয়েছে বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও সিরাজগঞ্জ জেলা। টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ১৯ জানুয়ারি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মদিনে ঢাকা মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ভেন্যুর মর্যাদা পায় বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম। আন্তর্জাতিক ভেন্যুর স্বীকৃতির পর শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ৫টি এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন হয়, যার ৪টিতেই জিতে যায় বাংলাদেশ। সেই থেকে স্টেডিয়ামটি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য আশীর্বাদ হয়ে ওঠে। কিন্তু ওই বছরের ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডের পর এখানে আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়নি। দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর পর শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে তারকা খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণে ক্রিকেটের সেই বন্ধ্যাত্ব ঘোচাল আজ।
মন্তব্য করুন