ডেমিস হাসাবিস, একজন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) গবেষক, স্নায়ুবিজ্ঞানী। সম্প্রতি ব্রিটিশ এই নাগরিক জিতেছেন বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মান নোবেল পুরস্কার ও সেই সাথে তার আরও একটি পরিচয় আছে তিনি একজন দাবা মাস্টারও।
১৯৭৬ সালের ২৭ জুলাই যুক্তরাজ্যের লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে গুগলের ডিপমাইন্ড প্রজেক্টে কাজ করছেন এবং তার গবেষণা তাকে রসায়নে নোবেল এনে দিয়েছে। ২০২৪ সালে রসায়নে এই পুরস্কারটি তিনি যৌথভাবে জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেভিড বেকার ও স্বদেশি জন জাম্পারের সঙ্গে। তাদের সফল মডেলটি প্রোটিনের কাঠামো পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী।
তবে ডেমিস হাসাবিসের নোবেল জয় শুধু বিজ্ঞানজগতে নয়, দাবা অঙ্গনেও আলোড়ন তুলেছে। কারণ দাবাতেও তিনি ছিলেন অসামান্য প্রতিভাধর। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ২৩০০ ইলো রেটিং নিয়ে তিনি অর্জন করেছিলেন ফিদে মাস্টারের খেতাব। সেই সময়ে অনূর্ধ্ব-১৪ দাবাড়ুদের মধ্যে তিনি ছিলেন বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা, আর তার সামনে ছিলেন কেবল কিংবদন্তী দাবাড়ু জুডিথ পোলগার। জুডিথকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নারী দাবাড়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি গ্র্যান্ডমাস্টারের রেকর্ড গড়েছিলেন।
ডেমিসের দাবা জীবনও কম সফল ছিল না। তিনি ইংল্যান্ডের জুনিয়র দাবা দলগুলোর নেতৃত্বে ছিলেন এবং দাবা বোর্ডে তার অসাধারণ কৌশলের জন্য সুপরিচিত। এখন তিনি ইতিহাসে প্রথম দাবাড়ু হিসেবে স্টকহোমে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করবেন, যা অনেকের জন্য হবে বিশাল অনুপ্রেরণা।
প্রসঙ্গত, ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে, যার নামকরণ করা হয়েছে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে। তিনি ডিনামাইট আবিষ্কার করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছিলেন এবং তার ইচ্ছা অনুযায়ী প্রতি বছর পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্য খাতে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিও এই তালিকায় যুক্ত হয়।
ডেমিস হাসাবিসের এ অর্জন তার বৈজ্ঞানিক ও দাবার দক্ষতার একটি অনন্য মিশ্রণ, যা বৈশ্বিক মঞ্চে তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন