বেশ কিছুদিন ধরেই কিডনি, হৃদরোগসহ নানারকম শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন অঘোর মন্ডল। পরে আক্রান্ত হন ডেঙ্গুজ্বরে। অবশেষ দীর্ঘ রোগ ভোগের পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গুণি ক্রীড়া সাংবাদিক অঘোর মন্ডল। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর।
বুধবার (২৫ সেপেম্বর) বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার অকাল মৃত্যুতে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
শোক জানিয়েছে ক্রীড়া সাংবাদিকদের তিন সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসিসেয়েশন (বিএসপিএ), বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএসজেএ) ও বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট কমিউনিটি (বিএসজেসি)।
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ), বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনও (বাফুফে) শোক জানিয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক জানিয়ে পোস্ট করেছেন অনেকে। দেশের আরেক প্রখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক উৎপল শুভ্র তার পোস্টে লিখেছেন, ‘কত কথা, কত স্মৃতি! কত ট্যুরে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’। ১৯৯৫ মাদ্রাজ সাফ গেমস তো কাভার করতে গিয়েছিলাম ভোরের কাগজ থেকে একসঙ্গেই। ভোরের কাগজ থেকে সবাই প্রথম আলোতে আসব, শেষ মুহূর্তে আপনার মত বদলানো নিয়ে কত অভিমান! আরও কত কী যে মনে পড়ছে! আপাতত শুধু বিদায় বলি অঘোর। আবার দেখা হবে মৃত্যুর ওপারের রহস্যময় ওই অজানা জগতে। ওখানেও কি প্রেসবক্স আছে? পারলে জানাবেন।’
আরেক সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক এবং জাগো নিউজ টুয়েন্টি ফোরের বিশেষ প্রতিনিধি আরিফুর রহমান বাবু তার পোস্টে লিখেছেন, ‘মনটা বিষাদে ভরে গেল, দুঃসংবাদ। চরম দুঃসংবাদ। ক্রীড়া সাংবাদিকতায় আমার প্রথম বন্ধু, ভাই, সুহৃদ, সহযোদ্ধা, শুভাকাঙ্খী অঘোর দা আর নেই। দেশ বরেন্য ক্রীড়া সাংবাদিক অঘোর মন্ডল চলে গেলেন না ফেরার দেশে। মনে পড়ে আজ সে কোন জনমে বিদায় সন্ধ্যাবেলা – আমি দাঁড়ায়ে রহিনু এপারে তুমি ওপারে ভাসালে ভেলা। সেই সে বিদায় ক্ষণে শপথ করিলে বন্ধু আমার, রাখিবে আমারে মনে, ফিরিয়া আসিবে খেলিবে আবার সেই পুরাতন খেলা।’ দৈনিক কালবেলার ক্রীড়া সম্পাদক রানা হাসান লিখেছেন, ‘অঘোর দাদা। পরিচয় তার সাথে তিন যুগ আগে। আর ঘনিষ্ঠতার বয়স ৩৪ বছর , তখন আমি খেলোয়াড়-সংগঠক। পেশার গুরু হিসেবে তাকে মান্য করার বয়স ২৭/২৮ বছর। সব মিলিয়ে অঘোর দাদার সাথে আত্মার সর্ম্পক। বেশকিছুদিন থেকেই ছিলেন তিনি স্বাস্থ্য ঝুঁকির মাঝে। সম্প্রতিক সময়ে সেই ঝুঁকির মাত্রা বেশ কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছিল । পিজির কেবিনে যখন দাদা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আমরা ভক্তরা তখন তার প্রাণ ভিক্ষায় প্রার্থনারত... এভাবেই কেটে যাচ্ছিল গত কয়েকদিন। উপরওয়ালা ভালো বুঝেই আমাদের আর অপেক্ষায় রাখলেন না... সব সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটিয়ে প্রিয় অঘোর দাদাকে নিয়ে গেলেন তার কাছে... দাদা... যেখানেই থাকবেন ভালো থাকবেন, এমন বিশ্বাস নিয়েই আমরা আছি এই জগতে... নিশ্চয়ই দেখা হবে অচিরেই।’
এ ছাড়া অনেক ক্রীড়া সংগঠক, ক্রীড়াবিদ এবং ক্রীড়া সাংবাদিকেরা অঘোর মন্ডলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে।
মন্তব্য করুন