সম্ভাবনাময় যেসব ক্রীড়া ডিসিপ্লিন অপমৃত্যুর পথে, তার অন্যতম উশু। স্বতন্ত্র ক্রীড়া ডিসিপ্লিন হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর একাধিক আন্তর্জাতিক সাফল্য পাওয়া খেলাটি পতনের অন্যতম কারণ রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি। খেলাটি মুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করার দাবি তুলেছেন উশু ফাউন্ডার্স ফোরাম। এক সময় মার্শাল আর্ট কনফেডারেশনের আওতাধীন ইভেন্ট হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করা উশু আলাদা ডিসিপ্লিন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ২০০৭ সালের অক্টোবরে। এক বছরের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ান উশু চ্যাম্পিয়নশিপে ৩ স্বর্ণ, ৭ রুপা ও ১১ ব্রোঞ্জপদক জয় করে উশু।
সে ধারাবাবিাহিকতায় ২০১০ সালের এসএ গেমসে দুটি স্বর্ণ ও দুটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে বাংলাদেশ। টানা দুটি সাফল্যের পরই সবার নজরে আসে বাংলাদেশ উশু, এভাবেই একসময় রাজনৈতিক প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে পথ হারায় খেলাটি। পরবর্তীতে রাজনৈতিক পালা বদলে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পিছিয়েছে বাংলাদেশ উশু।
দীর্ঘদিন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া উপকমিটির সদস্য দুলাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ উশু ফেডারেশনের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করা এবং ফেডারেশনের বিগত সব আর্থিক হিসেবের অডিটসহ সাত দফা দাবি পেশ করেছেন উশুর প্রতিষ্ঠাতারা।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ উশু ফাউন্ডার্স ফোরামের চেয়ারম্যান অ্যাড. শহীদুল হক ভূঁইয়া, মহাসচিব শিফু দিলদার হাসান (দিলু), কোচ, জাজেস ও সংগঠকরা এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাড. শহীদুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘উশুতে বর্তমান স্বৈরাচারী কমিটির বিলুপ্তি দাবি করছি। প্রতিষ্ঠাতারা অনেক পরিশ্রম করে জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশনটি গড়ে তুলেছেন এবং সাফল্য এনে দিয়েছেন। কিন্তু তারপর এ ফেডারেশনকেও রাজনৈতিকভাবে দখল করা হয়েছে।’
উশুর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শিফু দিলদার হাসান বলেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে বরাদ্দরকৃত টাকা নিয়ে ক্রীড়ার উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি বর্তমান কর্তাব্যক্তিরা। বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা বাবদ ২১ লাখ টাকা খরচ দেখিয়েছেন তারা।’
প্রতিষ্ঠার পর উশুকে বিকেএসপি, সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড ও বিভিন্ন সংস্থায় যুক্ত করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায়ও নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশের সংগঠকরা। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে প্রভাব খাটিয়ে ফেডারেশন দখল করার পর থেকে পথ হারিয়েছে বাংলাদেশ উশু। খেলাটিকে সঠিক পথে ফেরানোর দাবি জানানো হয়েছে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে।
আওয়ামী লীগের ক্ষমতাসীনদের কর্তৃত্বের বর্ণনা দিতে গিয়ে জানানো হয়, ২০১০ এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী খেলোয়াড় মেজবাহ উদ্দিনকে গত ১০ বছর ফেডারেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
মন্তব্য করুন