স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৩ পিএম
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

হাঙ্গরের আক্রমণে পা হারানো সাঁতারুর রৌপ্য পদক জয়

আলি ট্রুইট। ছবি : সংগৃহীত
আলি ট্রুইট। ছবি : সংগৃহীত

প্রতিবন্ধকতা থেকে ফিরে আসার অনেক গল্পই পাওয়া যাবে ক্রীড়াঙ্গনে। তবে হিংস্র হাঙ্গরের কামড়ে পা হারানোর পরও ক্রীড়াঙ্গনে ফেরত আসার উদহারণ পাওয়া দুষ্কর। এমনটাই করে দেখিয়েছেন মার্কিন সাঁতারু আলি ট্রুইট।

হাঙ্গরের আক্রমণে পা হারানোর মাত্র ১৬ মাস পরই আলি ট্রুইট তার সাঁতারের ক্যারিয়ারে ফিরে এসে চলমান প্যারিস প্যারালিম্পিকে রৌপ্য পদক জিতেছেন।

এই চমকপ্রদ প্রত্যাবর্তনের শীর্ষ বিন্দু ছিল বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে, যখন ট্রুইট মহিলাদের এস১০ ৪০০-মিটার ফ্রিস্টাইলে রৌপ্য পদক অর্জন করেন এবং নতুন এক আমেরিকান রেকর্ড স্থাপন করেন, তার সময় ছিল ৪:৩১.৩৯।

সাঁতার শেষে ট্রুইট বলেন, ‘এটি আমার জীবনের এক বিশেষ মুহূর্ত। আমি ভাগ্যবান যে, এমন একটি শক্তিশালী সমর্থনশক্তি পেয়েছি আমার চারপাশে। যখন আপনি মৃত্যুর মুখোমুখি হন এবং জীবনের দ্বিতীয় সুযোগের মূল্য উপলব্ধি করেন, তখন আপনি সেটির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চাইবেন।’

২০২৩ সালের মে মাসে, তুর্কস ও কাইকোসের উপকূলে আটলান্টিক মহাসাগরে সাঁতার কাটার সময় হাঙ্গর আক্রমণের শিকার হন তিনি। নিজের জীবন বাঁচাতে হাঙ্গরের সঙ্গে লড়াই করে ৭০ মিটার সাঁতরে একটি নৌকায় পৌঁছাতে সক্ষম হন তিনি, যেখান থেকে তাকে দ্রুত এয়ারলিফ্ট করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

‘আমি মনে করি সেটি ছিল আমার বেঁচে থাকার প্রবৃত্তি। এটি ছিল একটি ভয়ঙ্কর দিন, একটি ভয়াবহ স্মৃতি। কিন্তু আমি বেঁচে আছি, আমি এখানে আছি এবং আমি জীবনের এই সুযোগটিকে কাজে লাগাতে চাই,’ ট্রুইট স্মৃতিচারণ করে বলেন।

চিকিৎসকরা তার জীবন বাঁচাতে তিনটি বড়ো অপারেশন করেন এবং শেষমেষ তার বাম পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে বাধ্য হন। যদিও তিনি জলে থাকা নিয়ে এক ধরনের ভীতির মধ্যে পড়েন। তবে ট্রুইট তার পুরনো কোচ জেমস ব্যারোনের সঙ্গে ফের যুক্ত হন সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে এবং এর ঠিক এক মাস পরই প্রথম প্যারাস্পোর্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।

ট্রুইট বলেন, ‘প্রত্যেক দিনই আমি নতুন কিছু শিখি যা সেই আক্রমণের স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনে। আমি ভেবেছিলাম আমার ভয় কাটিয়ে উঠতে পারব, কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছি যে এই যাত্রাটি সহজ নয়। তবে আমি এখন অনেকটাই স্বাচ্ছন্দ্যে আছি এবং জলে থাকা নিয়ে অনেকটা ভালো অনুভব করছি।’

প্যারিসে প্যারালিম্পিকের লা ডিফেন্স এরিনায় ট্রুইটের সেই কঠিন দিনে সঙ্গে থাকা দুই বন্ধু, সোফি এবং হান্নাও উপস্থিত ছিলেন। সোফি তার পায়ে টুর্নিকিট বেঁধে তার জীবন রক্ষা করেছিলেন এবং হান্না ছিলেন সেই চিকিৎসক, যিনি তাকে হাসপাতালে প্রথম চিকিৎসা দেন।

ট্রুইট কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তাদের এবং তার পরিবারের প্রশংসা করেন, ‘আমার বাবা-মা অসাধারণভাবে আমাদের বড় করেছেন। আমি কৃতজ্ঞ যে এমন একটি পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধব পেয়েছি যারা আমার এই যাত্রায় পাশে ছিল।’

এই অবিশ্বাস্য যাত্রার শেষে ট্রুইট দেখিয়ে দিলেন যে জীবনের চরম বিপর্যয়কেও সাহস, ধৈর্য এবং ভালোবাসার মাধ্যমে জয় করা সম্ভব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা একমত

ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ১০ জনের মৃত্যু

‘বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদদের স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হবে’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যমত জরুরি : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সাময়িক বন্ধের পর খুলল যমুনা ফিউচার পার্ক

রাজকীয় সংবর্ধনায় সিক্ত সাফজয়ী ৩ পাহাড়ি কন্যা   

মোহাম্মদপুরে শহীদ জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

‘এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়’

ইউপি চেয়ারম্যানের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ‘হ্যালো চেয়ারম্যান’

একদিনের জন্য কারাগারে যেতে হবে হলান্ডকে!

১০

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী

১১

‘ফ্যাসিস্ট’ হাসিনার সরকার কাউকে রেহাই দেয়নি : রিজভী

১২

সব সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বারা সম্ভব নয় : তারেক রহমান

১৩

ভঙ্গুর শিক্ষাব্যবস্থাকে দ্রুত আলোর পথ দেখাব : ভিসি আমানুল্লাহ

১৪

ম্যানসিটির অবনমন হলেও দলের সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি গার্দিওলার

১৫

আন্দোলনে ঢামেক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ প্রেরণা জুগিয়েছিল : আসিফ মাহমুদ

১৬

ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে দুদিনে মামলা ২৭০৯ 

১৭

চাকরি দিচ্ছে ওয়ালটন, ১৮ বছর হলেই আবেদন

১৮

রাহুল-জয়সওয়ালের ব্যাটে পার্থে ভারতের দাপট

১৯

এবার ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়াল আরও এক দেশ

২০
X