রিও ডি জেনেইরোর ঝলমলে আকাশ টোকিওতে এসে মেঘে ঢেকে গিয়েছিল। হতাশার মেঘ দূরে ঠেলে সিমোন বাইলসের আকাশে আবারও সোনালি রোদের হাসি। জিমন্যাস্টিকসের দলগত ইভেন্টের পর ব্যক্তিগত ইভেন্টেও স্বর্ণ জিতলেন যুক্তরাষ্ট্রের তারকা।
২৭ বছর বয়সী মার্কিন জিমন্যাস্ট তৃতীয় অ্যাথলেট হিসেবে অলিম্পিকসের অল-অ্যারাউন্ড ইভেন্টে দুটি সোনা জিতলেন। ভেরা কাসলাভস্কা ও লারিসা লাতিনিনারও একই কীর্তি আছে। তারা অবশ্য পর পর দুই অলিম্পিকে এ কীর্তি গড়েছেন। বাইলস করলেন রিও এবং প্যারিসে। মাঝে টোকিও অলিম্পিকে দলগত ইভেন্টের ভল্টে খেই হারান। পরে আসর থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। সে দুঃস্বপ্ন পেছনে ফেলে প্যারিসে ফিরলেন, ফেরাটা ছিল রাজসিক ভঙ্গীতে!
কেবল ব্রাজিলিয়ান প্রতিদ্বন্দ্বী রেবেকা আন্দ্রেদে নয়, তার প্রতিপক্ষ ছিল বার্সি অ্যারেনার গ্যালারিও। ইভেন্ট চলাকালে গ্যালারিতে ‘রে.. বে.. কা.., রে.. বে.. কা..’ রব উঠেছিল। শেষপর্যন্ত ৫৯.১৩১ স্কোর গড়ে বিজয়ের হাসি হেসেছেন সিমোন বাইলসই।
এটি ছিল তার ৬ষ্ঠ অলিম্পিক স্বর্ণপদক। রিও অলিম্পিকে জিতেছিলেন ৪ স্বর্ণপদক! সব মিলিয়ে অলিম্পিকে ৯ পদক জিতেছেন আমেরিকান তারকা জিমন্যাস্ট। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বিস্ময়কর ২৩ স্বর্ণপদক রয়েছে তার ঝুলিতে। প্যাসিফিক রিম চ্যাম্পিয়নশিপে আরও দুটি স্বর্ণপদক। সব মিলিয়ে মেজর ইভেন্টে ৩১ স্বর্ণ, ৫ রুপা এবং ৫ ব্রোঞ্জ জিতে ইতিহাসের অন্যতম সেরা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন মার্কিন এ তারকা।
গ্যালারিতে ‘রে.. বে.. কা.., রে.. বে.. কা..’ স্লোগান উঠেছে, ব্রাজিলিয়ান জিমন্যাস্ট সিমোন বাইলসের সঙ্গে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছিলেন। সেটা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, রেবেকাকে আর প্রতিপক্ষ হিসেবে চাচ্ছেন না যুক্তরাষ্ট্রের এ তারকা, ‘আমি রেবেকার সঙ্গে আর কোন প্রতিযোগিতায় লড়তে চাই না। আমি ক্লান্ত! তিনি আমার খুব কাছাকাছি ছিলেন। তার সঙ্গে আমি লড়াই করে জিততে পেরে উত্তেজিত এবং গর্বিত। কিন্তু যদি সত্যি বলি, এটা ছিল বেশ অস্বস্তিকর।’
এ ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছেন আরেক মার্কিনি সুনিসা লি। ইভেন্টের পর এ জিমন্যাস্ট বলেছেন, ‘আমি নিজেকে বলেছিলাম যে নিজের উপর কোনো চাপ নেওয়া যাবে না। এ কারণে আমি বিগত অলিম্পিক সম্পর্কে ভাবতে চাইনি। কাউকে কিছু প্রমাণ করার চেষ্টাও করিনি। খেলাটার দিকে মনোযোগ দিয়েছিলাম। এটা প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম যে, আমি সাজটা সঠিকভাবে করতে পারি।’
মন্তব্য করুন