চেক প্রজাতন্ত্রের টেনিস তারকা বলতে সবাই চিনতেন ইয়ানা নভোৎনাকে। ১৯৯৮ সালে উইম্বলডন জিতেছিলেন তিনি। ২৬ বছর পর আরেক চেক নারী অল-ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাবের সেন্টার কোর্টে ভিনাস রোজওয়াটার ডিস (রুপার থালা) তুলে ধরলেন। বারবোরা ক্রেচিকোভা উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর চোখের জলে স্মরণ করেছেন গুরু ইয়ানাকে।
ইতালির প্রথম নারী টেনিস তারকা হিসেবে উইম্বলডনের ফাইনালে উঠেছিলেন জেসমিন পাওলিনি। শনিবার তাকে ৬-২, ২-৬, ৬-৪ গেমে হারিয়ে উইম্বলডনের নতুন রানি হয়েছেন ক্রেচিকোভা। সাফল্যের পরই স্মরণ করেছেন ২০১৭ সালে জরায়ুর ক্যান্সারে মারা যাওয়া ইয়ানাকে। ক্রেচিকোভাকে কোচিং করাতেন তিনি। মৃত্যুর আগে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ক্রেচিকোভার সাফল্যের ব্যাপারে। উইম্বলডন জিতে ইয়ানার কথা সত্যি প্রমাণ করেছেন ক্রেচিকোভা। শিরোপা হাতে নিয়ে বলেছেন, ‘সেদিন তার (ইয়ানা) দরজায় কড়া নাড়ার কথা এখনো মনে আছে। ওটা আমার জীবন বদলে দিয়েছিল। মাত্রই জুনিয়র শেষ করেছি। জানতাম না কী করব। পেশাদার টেনিস চালিয়ে যাব না কি পড়াশোনায় মন দেব? তিনি আমাকে বলেছিলেন যে, আমার মধ্যে প্রতিভা রয়েছে। অবশ্যই পেশাদার টেনিসে মন দেওয়া উচিত। মারা যাওয়ার আগেও বলেছিলেন, আমি গ্র্যান্ডস্লাম জিততে পারি। ২০২১ সালে প্যারিসে স্বপ্ন পূরণ করেছিলাম। তবে ১৯৯৮ সালে ইয়ানা যে ট্রফিটা জিতেছিল (উইম্বলডন), সেই ট্রফি আমিও একদিন জিতব এটা কোনোদিন ভাবতে পারিনি।’
২০২১ সালে ফরাসি ওপেন জেতেন ক্রেচিকোভা। ওটাই ছিল তার প্রথম মেজর টাইটেল। সেই সময়েও ক্রেচিকোভা বলেছিলেন, ‘ইয়ানা নভোৎনা মারা যাওয়ার সময় আমাকে বলেছিল, একটা গ্র্যান্ডস্লাম জিততে। আজ নিশ্চয়ই সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার অনুপ্রেরণা ছিল সে। খুব মিস করি তাকে। আশা করব সে যেখানেই আছে ভালো আছে।’
এমনিতে সিঙ্গেলেরে চেয়ে ডাবলসে বেশি সফল ক্রেচিকোভা। ২০১৮ সালে ফরাসি ওপেন এবং উইম্বলডনে ডাবলস জিতেছিলেন। পরে আরও ছয়টি ট্রফি জিতেছেন। এবার উইম্বলডনের একক শিরোপাও জিতলেন। এরপর কী করবেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘জানি না। মনে হচ্ছিল আমি জিতব। কিন্তু শেষ পয়েন্ট না পাওয়া পর্যন্ত বিশ্বাস হচ্ছিল না। আপাতত দলের সঙ্গে কথা বলব। গত দুই মাস খুব পরিশ্রমে কেটেছে। আপাতত কাল বিশ্রাম নিব। বাকিটা পরে ভাবব।’
উইম্বলডন জয় তার জীবনের সেরা দিন উল্লেখ করে ক্রেচিকোভা বলেন, ‘কোনো কথা বলার অবস্থাতেই নেই। অবিশ্বাস্য লাগছে। আমার টেনিস জীবনের সেরা দিন। আমার জীবনের সেরা দিন। কী বলব বুঝতে পারছি না।’
শিরোপা জয়টা বিশ্বাস হচ্ছে না জানিয়ে ক্রেচিকোভা বলেন, ‘আমার মনে হয় দেশের কেউ ট্রফি জয়ের কথা বিশ্বাসই করবে না। আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছি না। দুই সপ্তাহ আগে একটা কঠিন ম্যাচ খেলেছি। তিন ঘণ্টার কাছাকাছি লড়াই হয়েছিল। আমি চোট পেয়েছিলাম, অসুস্থ ছিলাম। মৌসুমের শুরুটাই ভালো হয়নি। তার পরও যে হাতে উইম্বলডনের ট্রফি হাতে সেন্টার কোর্টে দাঁড়িয়ে আছি এটা ভাবতেই অবিশ্বাস্য লাগছে।’
মন্তব্য করুন