আগামী সোমবার (২৪ জুন) নিজের ৩৭তম জন্মদিন পালন করবেন লিওনেল মেসি। এর আগে সঙ্গ করে নিয়ে যাচ্ছেন কোপা আমেরিকার প্রথম ম্যাচের জয়ের স্বস্তি।
বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকালে (২১ জুন) আটলান্টার মার্সিডিজ-বেঞ্জ স্টেডিয়ামে প্রায় ৭১ হাজার দর্শকের সামনে কোপা আমেরিকায় অভিষিক্ত কানাডাকে ২-০ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। এ ম্যাচে গোল না পেলেও বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের দুটি গোলের কারিগর ছিলেন তিনি।
এ ম্যাচ দিয়ে লাতিন মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড (৩৫) গড়েছেন মেসি। এখন থেকে যত ম্যাচ খেলবেন তত রেকর্ডটি বড় হবে। এ নিয়ে টানা সপ্তম আসর খেলতে নেমেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি।
প্রীতি ম্যাচে গুয়েতেমালার বিপক্ষে করেছিলেন জোড়া গোল। তবে কানাডার বিপক্ষে অন্তত তিনটি সবচেয়ে সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন তিনি। তাহলে কি বয়সের ভারে কমে গেছে মেসির গোল করার ক্ষমতা? এই প্রশ্ন তুলতে পারেন তার সমালোচকরা। কারণ মিসগুলো ছিল অবিশ্বাস্য।
Lionel Messi has the most goal contributions in major international tournaments, with 26 goals and 28 assists (54 G/A) in the World Cup and Copa América. pic.twitter.com/iygheE0qTZ
— All About Argentina (@AlbicelesteTalk) June 21, 2024
এই যেমন ম্যাচের ৬৬ মিনিটে পাল্টা-আক্রমণ থেকে মাঝমাঠে বল পেয়ে যান মেসি। এককভাবে ফাঁকা মাঠে বল নিয়ে ঢুকে পড়ে কানাডার রক্ষণে। তার সামনে শুধুই প্রতিপক্ষের গোলপিকার ক্রেপিয়াও।
মেসির শট রুখে দেন তিনি। কিন্তু আবারও বল পেয়ে যান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। এবার তার জোরালো শট অবিশ্বাস্যভাবে আটকে দেন কানাডার ডিফেন্ডার কর্নেলিয়াস।
প্রায় একই চিত্র ম্যাচের ৭৯ মিনিটে। এবারও মাঝমাঠে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন মেসি। বেশ খানিকটা দৌড়ে এগিয়ে যেতে থাকেন কানাডার গোল পোস্টের দিকে। তার পেছন পেছন ছুটছিলেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা।
তার সামনে এবারও গোলকিপার ক্রেপিয়াও একা। মেসির বাঁ-পায়ের চিরচেনা চিপ, কিন্তু বল গড়িয়ে গড়িয়ে চলে যায় গোলপোস্টের বাঁ পাশ ঘেঁষে। আর আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি খানিকক্ষণ মাটিতে পড়ে থাকেন একরাশ হতাশা নিয়ে।
গোল না পেলেও আর্জেন্টিনার দুই গোলে অবদান রয়েছে তার। গোলশূন্যভাবে ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পর ম্যাচের ৪৯ মিনিটে প্রথম গোল পায় আর্জেন্টিনা। মেসির কাছ থেকে কানাডার বক্সের ভেতরে বল পান মিডফিল্ডার অ্যালেক্সিস ম্যাক–অ্যালিস্টার। তিনি সুবিধাজনক স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা জুলিয়ান আলভারেজকে বল দেন।
মাত্র ১০ গজ দূর থেকে ডান পায়ের শটে আর্জেন্টিনার প্রথম গোলটি করেন ম্যানসিটির এই স্ট্রাইকার। এতে টানা ১৩ ম্যাচ পর জাতীয় দলের জার্সিতে গোল খরা কাটান আলভারেজ।
দ্বিতীয় গোলের অবদান রয়েছে মেসির। ৮৮ মিনিটে সরাসরি আর্জেন্টাইন অধিনায়কের পাস থেকে। তার থ্রু পাস থেকে আর্জেন্টিনাকে দ্বিতীয় গোল উপহার দেন লাউতারো মার্তিনেজ। এর আগে গুয়েতেমালার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন ইন্টার মিলানের অধিনায়ক।
নিজে গোল না পেলেও দলের জয়ে নিঃসন্দেহে খুশি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। কারণ এর আগে চিলি বিপক্ষে ড্র দিয়ে শুরু করেছিল ২০২১ সালের কোপা আমেরিকা। আর সৌদি আরবের কাছে হার দিয়ে শুরু হয়েছিল কাতার বিশ্বকাপ।
শেষ পর্যন্ত দুই টুনার্মেন্টেই শিরোপা জেতে আর্জেন্টিনা। আর এবার জয় দিয়ে শিরোপা ধরে রাখার মিশন শুরু। ঠিক যেমনটা চেয়েছিলেন, শুরুটা তেমনই হয়েছে মেসি ও আর্জেন্টিনার। গোল মিসের আক্ষেপ থাকলেও, রয়েছে জয়ের স্বস্তি।
পরের ম্যাচ বুধবার (২৬ জুন), প্রতিপক্ষ চিলি। এর আগে সোমবার (২৪ জুন) মেসি পালন করবেন ৩৭তম জন্মদিন। জয়ের স্বস্তি আর আনন্দে জন্মদিনটা উপভাগ করুক মেসি আর তার সতীর্থরা!
মন্তব্য করুন