সবে মাত্র ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল পা রেখেছেন ইউসেফ চিপ্পো। নিজেকে প্রমাণে মরিয়া মরক্কোর এই মিডফিল্ডার। এর মধ্যে চলে আসে রমজান। রোজা রেখে অনুশীলন চালিয়ে যান তিনি। ১৯৯৭ সালে পর্তুগালের ক্লাব এফসি পোর্তোর কর্তাদের কাছে রোজা রাখার বিষয়টি ছিল প্রত্যাশিত।
সকাল-বিকাল, দুবেলা অনুশীলন ছিল কষ্টসাধ্য। তার উপর খাবার-পানি ছাড়া সারাদিন কাটিয়ে দেওয়া ছিল অসম্ভব। কিন্তু রোজা রেখে অনুশীলনের পরও ইউসেফের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার পরিকল্পনা করে পোর্তো।
দশকের পর দশক, মুসলিম ফুটবলারদের রোজা রাখা নিয়ে ক্লাবগুলোর আনুষ্ঠানিক কোনো ভাবনা ছিল না। ফুটবলে প্রায় পুরো মাঠ চষে বেড়াতে হয়। আবার বদলি খেলোয়াড়ের নিয়মও সীমিত। তাই রোজাদার মুসলিম ফুটবলাররা ম্যাচের মাঝখানে বিশ্রাম নেবেন কিংবা একটু সময় নিয়ে ইফতার করবেন সেই সুযোগ ছিল না।
রোজা রাখা ফুটবলারদের বুদ্ধি দিয়ে ইফতারের উপায় বের করতেন। বেশিভাগ সময় দেখা যেত ইফতারের সময় চোটের অভিনয় করছেন কেউ। এই সুযোগে সাইডলাইনে গিয়ে রোজা ভাঙতেন তারা।
ইউরোপে বেড়েছে মুসলিম ফুটবলারের সংখ্যা ও গুরুত্ব। তাই লিগ ও ক্লাব কর্তৃপক্ষ ফুটবলারদের রোজা রাখার বিষয়টি ইতিবাচক চোখে দেখছে। তবে এখনো এ পথে হাঁটেনি ফ্রেঞ্চ লিগ।
মুসলিম ফুটবলারদের জন্য অনুশীলন পরিবর্তনের পাশাপাশি পুষ্টি-পরিকল্পনাও ভিন্নতা আনা হয়েছে। এমনকি ইফতার জন্য খেলায় কিছু সময় বিরতির অনুমোদনও দিয়েছে কয়েকটি লিগ।
দুই মৌসুম আগে সাদিও মানের অনুরোধে রোজার মাসে অনুশীলন সূচি বদলে দেন কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। একই ব্যবস্থা নিয়ে ছিল ইংলিশ আরেক ক্লাব আর্সেনাল। প্রিমিয়ার লিগের অন্যান্য ক্লাব এবং ইউরোপে বেশ কিছু ক্লাব মুসলিম ফুটবলারদের রোজা রাখাকে গুরুত্ব সহকারে নেয়।
ইফতারের সময় বিরতির নিয়ম চালু রয়েছে ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের। রেফারিদের একই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে জার্মানিতেও। তবে এ পথে হাঁটেনি ফ্রান্স। জাতীয় দল ও বয়স ভিক্তি দলের কেউ রোজা রেখে অনুশীলনে নামলে সেই ফুটবলারকে নিষিদ্ধ করতে বলেছে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন।
মজার ব্যাপার, মুসলিম ফুটবলারের দেখাদেখি অনেক অমুসলিম ফুটবলার সারা দিন না খেয়ে থাকতেন। ইংল্যান্ডে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে খেলা মিসরীয় ডিফেন্ডার আহমেদ এলমোহাম্মেদী জানান, তার সাবেক সতীর্থ আয়ারল্যান্ডের পল ম্যাকশেন এক দিনের জন্য তার দেখাদেখি রোজাও রেখেছিলেন
মন্তব্য করুন