হামজা চৌধুরী আসছেন, মার্চেই বাংলাদেশ দলে যোগ দিতে পারেন, সৌদি আরবে জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দেবেন এ ফুটবলার- এমন বাহারি শিরোনামে নানা সংবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে, যার সবই এখন পর্যন্ত গুজব-গুঞ্জনের পর্যায়ে।
বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা হামজা চৌধুরীকে চাচ্ছেন। ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে সাত ম্যাচ খেলা মিডফিল্ডারও বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবছেন। দুপক্ষের আলাপ-আলোচনা হয়েছে বটে, কোনোকিছুই এখনো চূড়ান্ত নয়। সবকিছু চূড়ান্ত হলে লেস্টার সিটির এ ফুটবলারকে লাল-সবুজ জার্সিতে দেখা যাবে। হামজা চৌধুরীর সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান ফুটবলার সামিত সোমকেও রাডারে রেখেছেন বাংলাদেশ দলের কোচিং স্টাফরা।
এ সম্পর্কে জাতীয় দলের প্রধান কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরার গতকাল বলেছেন, ‘আমি মনে করি হামজা চৌধুরীকে নিয়ে ইতিবাচক হওয়া উচিত। সে এই ফিফা উইন্ডোতে হয়তো খেলছে না, আজ হোক কাল হোক এটা বাস্তবায়ন হবে। কারণ তার বিষয়ে আমরা ইতিবাচক। আশা করছি, তার মতো খেলোয়াড়কে শিগগিরই পাওয়া যাবে।’
ম্যানেজার আমেরা খান কালবেলাকে বলেন, ‘হামজা চৌধুরী ও সামিত সোমকে খেলানোর সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) অনুরোধ করেছেন কোচ। বাফুফের সংশ্লিষ্ট বিভাগ দুই ফুটবলারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে।’
ডেনমার্কে বেড়ে ওঠা জামাল ভূঁইয়া দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে খেলছেন। ফিনল্যান্ড থেকে এসে তারিক রায়হান কাজীও নিয়মিত খেলছেন। দলকে শক্তিশালী করতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমন আরও ফুটবলারকে অন্তর্ভুক্ত করতে চান হাভিয়ের ক্যাবরেরা।
লাল-সবুজদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জাতীয় দলে ক্যাবরেরার সঙ্গে কাজ করা কোচ হাসান আল মামুন বলেন, ‘দলটা কীভাবে আরও শক্তিশালী করা যায়, সারাক্ষণ এ নিয়েই ভাবেন হাভিয়ের (হাভিয়ের ক্যাবরেরা)। এ জন্য নানা পরিকল্পনা করছেন তিনি। সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই বিভিন্ন দেশে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের দলে যুক্ত করতে চান তিনি।’
হামজা চৌধুরীর বাবা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের গ্রানাডা থেকে ইংল্যান্ড প্রবাসী হন। তিনি সিলেটের হবিগঞ্জ থেকে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমানো রাফিয়া দেওয়ান চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। এ দম্পতির সন্তান হামজা চৌধুরী। তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে হামজা মায়ের সঙ্গেই থেকে যান। বাবার সূত্রে শরীরে ক্যারিবিয়ান রক্ত প্রবাহিত হলেও হামজা চৌধুরী নিজেকে এশিয়ান পরিচয় দিতেই পছন্দ করেন।
২৬ বছর বয়সী হামজা চৌধুরী সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশি ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে যোগসূত্রও তৈরি করেছেন। বাংলাদেশি উদীয়মান ফুটবলার শেখ মোরসালিনকে ইনস্টাগ্রামে ফলো করেছেন। ইনস্টাগ্রামে হামজা ১ হাজার ৬৭ জনকে অনুসরণ করেন, তাদের মধ্যে আছেন লন্ডন প্রবাসী স্প্রিন্টার ও বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমান। আছেন লা লিগা ক্লাব রায়ো ভায়োকানোর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইংলিশ উইঙ্গার জিদান মিয়া। সামাজিকমাধ্যমে যোগসূত্রটা হামজা চৌধুরীর লাল-সবুজদের হয়ে খেলার গুঞ্জনের পালে হাওয়া দিচ্ছে। দেশের ফুটবল ভক্তরা চাচ্ছেন গুঞ্জনটা দ্রুতই বাস্তবায়িত হোক!
মন্তব্য করুন