২০২২ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ট্রফি জিতে ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছিল। আলবিসেলেস্তেরা সোনালি ট্রফি জয়ের পাশাপাশি তাদের সমর্থকদেরও প্রশংসা এসেছিল ফুটবল বিশ্বের সব প্রান্ত থেকে। তাদের এই অভূতপূর্ব সমর্থন তাদের এনে দিয়েছিল সেরা সমর্থকের পুরস্কারও। তাদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত কার্লোস পাসকুয়াল যাকে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বিখ্যাত ফুটবল ভক্ত বলে বলা হয় তিনি আর মেসিদের সমর্থনে মাঠে থাকবেন না। ৮৩ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেছেন ‘এল তুলা’ ডাক নাম পাওয়া এই ফুটবল পাগল ভক্ত।
পাসকুয়াল আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের সম্ভবত সবচেয়ে বিখ্যাত ভক্ত ছিলেন। সম্প্রতি স্বাস্থ্য জটিলতায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তিনি কোমায় চলে যান এবং পরে স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
‘এল তুলা’ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও ম্যাচে জাতীয় দলকে গলা ফাটিয়ে সমর্থন দেওয়ার জন্য বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। তবে তিনি বেশি পরিচিতি পান যখন তিনি কাতারে ২০২২ বিশ্বকাপের পরে সমস্ত আর্জেন্টাইনদের পক্ষ থেকে ‘সেরা ভক্ত’-এর জন্য ফিফার পুরস্কার হাতে নেন।
পাসকুয়ালকে বেশ সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ‘এল তুলার’ পরিবার কয়েকদিন আগেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপারটি সম্পর্কে জানিয়েছিল, যেখানে তারা তার স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সমর্থকদের কাছে দোয়া চেয়েছিল।
আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘বুয়েনেস এইরেস’ জানিয়েছে, বুয়েনস এইরেসে মিতের সানাতোরিয়ামে গত ৩১ জানুয়ারি অস্ত্রোপচার করান তুলা। এর আগে কয়েক বছর নানা রকম শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এ কারণেই অস্ত্রোপচার করানো হয়েছিল। লিওনেল মেসির এলাকা রোজারিওতে জন্ম নেওয়া আর্জেন্টাইন ফুটবলের একনিষ্ঠ ভক্ত এই মানুষটিকে আর তার জাতীয় দলের ম্যাচে গ্যালারিতে দেখা যাবে না।
আর্জেন্টিনার পাগলা এই ভক্ত জার্মানিতে ১৯৭৪ সালের বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে কাতারে ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত মোট ১৩টি বিশ্বকাপে আলবিসেলেস্তেদের সমর্থন করে গেছেন।
ফিফা দ্য বেস্ট পুরস্কার নেওয়ার সময়ও তিনি ম্যাচের জন্য যে সমস্ত পোশাক পরতেন তা পরেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি পুরস্কার নেওয়ার পর বলেন, ‘একজন আর্জেন্টাইন হিসাবে আমি খুব খুশি কারণ আমরা সব পুরস্কার জিতেছি। ‘এল ডিবু,’ স্কালোনি, মেসি। এখন, একজন ভক্ত হিসেবে আমি খুব খুশি কারণ আমি সেই জার্মানি ১৯৭৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমি সব বিশ্বকাপ এবং কোপা আমেরিকাতে গিয়েছি।’
‘এই মুহূর্তে, ৮২ বছর বয়সে, আমি সর্বত্রই ছিলাম। আমি দরিদ্র, কিন্তু আমি সারা বিশ্ব ভ্রমণ করেছি। আমি আরেকজন ভক্ত যে হাজার হাজার আর্জেন্টাইনদের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি যারা আমাদের প্রিয় জাতীয় দলের জন্য উল্লাস করছে। এ ছাড়াও সারা বিশ্বে আমাদের দলের জন্য লক্ষ্য লক্ষ্য ভক্ত উদযাপন করে।’ তিনি মন্তব্য করেন।
শৈশবকালে, প্যাসকুয়াল গিগান্তে দে অ্যারোইটো স্টেডিয়ামের কাছে যেখানে ক্লাবটি অবস্থিত সেখানে থাকতেন। তুলার ছেলে জানায় যে তার বাবা স্রেফ সুযোগে স্ট্যান্ডে বেস ড্রাম বাজাতে শুরু করেছিলেন - এটি আলবিসেলেস্তের প্রতি তার আবেগ ছিল যা তাকে সারা বিশ্বে পরিচিত করেছিল।
মন্তব্য করুন