২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ‘ফুটবল ঈশ্বর’ ডিয়োগো ম্যারাডোনা। মৃত্যুর ৩ বছর পর অন্যরকম এক জয় পেলেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবল মহাতারকা। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে চলা কর ফাঁকির মামলায় ইতালির সর্বোচ্চ আদালত থেকে মুক্তি পেয়েছেন আর্জেন্টাইন ও নাপোলি কিংবদন্তি।
ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছিল ১৯৮০-এর দশকে। তখন অভিযোগপত্রে দায়ের করা হয়েছিল লিখটেনস্টাইনের এক প্রক্সি কোম্পানি ব্যবহার করে ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত নাপোলি থেকে পাওয়া ইমেজ স্বত্বের কর ফাঁকি দিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। কিন্তু দীর্ঘ তিন দশক পর অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন মারা যাওয়া ম্যারাডোনা।
১৯৯০ দশকের গোড়ার দিকে ম্যারাডোনার কর ফাঁকির তদন্ত শুরু হয়। নাপোলি ফরোয়ার্ডের বিরুদ্ধে ৩৭ মিলিয়ন ইউরো বা ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার কর ফাঁকির অভিযোগ আনা হয়। তৎকালীন ইতালিতে ব্যবহার কিছু জিনিসপত্রও বাজেয়াপ্ত করেছিল ইতালির রাজস্ব কর্তৃপক্ষ।
ম্যারাডোনার আইনজীবী অ্যাঞ্জেলো পিসানি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এটি শেষ হয়ে গেছে এবং আমি বিরোধিতার ভয় ছাড়াই স্পষ্টভাবে বলতে পারি, ম্যারাডোনা কখনই কর ফাঁকি দিয়েছিলেন না। এই চূড়ান্ত রায় সমর্থকদের প্রতি, খেলাধুলার মূল্যবোধের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছে। অথচ ৩০ বছর ধরে মিথ্যা অভিযোগ সহ্য করেছিলেন ম্যারাডোনা’
অনেক দীর্ঘ সময় ধরে ইতালি রাজস্ব কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালান ম্যারাডোনা। তবে এ মামলার নিষ্পত্তির আগেই ২০২০ সালে মৃত্যুবরণ করেন আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক।
১৯৮৪ সালে স্পেনের বার্সেলোনা থেকে ইতালির নাপোলিতে যোগ দেন ম্যারাডোনা। মাফিয়া ও সন্ত্রাসীদের শহর নেপলসকে ফুটবলীয় জাদুতে মুগ্ধ করেন আর্জেন্টিনার সাবেক অধিনায়ক। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইতালিয়ান সিরি আ শিরোপা এবং ইউরোপ সেরার মুকুট ‘উয়েফা কাপ’ জেতান এই কিংবদন্তি। ম্যারাডোনার এই অনবদ্য অবদানের জন্য তাকে ‘নেপলসের রাজা’ বলে ডাকেন নেপলসবাসী।
মন্তব্য করুন