ফুটবলের বদলে ইনজুরির সঙ্গেই যেন নেইমারের সখ্য বেশি। যা-ও একটু সম্ভাবনা ছিল তার, সেটুকুও শেষ করে দিলেন ব্রাজিল ফুটবল দলের চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমার। তাইতো সহসাই নেইমারকে দলে পাচ্ছে না ব্রাজিল, অপেক্ষা করতে হবে কয়েক মাস। চিকিৎসকদের ধারণা, আগামী বছর জুনে অনুষ্ঠিতব্য কোপা আমেরিকা শেষ হওয়ারও মাসখানেক পর পুরোপুরি ফিট নেইমারকে পাওয়া যেতে পারে।
চোটের কারণে আগামী মাসে শুরু হতে যাওয়া মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট কোপায় খেলতে পারবেন না তিনি। যদিও ইনজুরি ব্রাজিলের সর্বোচ্চ এ গোলদাতার জন্য নতুন কিছু নয়। ইউরোপের ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর থেকে চোটে পড়ে প্রায়ই থমকে গেছে তার ক্যারিয়ার।
কোপার আগে তার মাঠে ফেরা এক প্রকার কঠিনই। তেমনটা হলে আরও একবার নেইমারকে ছাড়াই কোপা আমেরিকা খেলতে হবে ব্রাজিলকে। এর আগে একই কারণে ২০১৯ কোপা আমেরিকায়ও খেলতে পারেননি তিনি।
ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট নাইনটি মিন এক প্রতিবেদনে বলেছে, ব্রাজিল তথা বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তি হওয়ার সব উপকরণ ছিল নেইমারের মাঝে। কিন্তু অত্যধিক ইনজুরি তার ক্যারিয়ারকে বাধাগ্রস্ত করছে।
ইনজুরি কিছুতেই তার পিছু ছাড়ছে না। ক্যারিয়ারের সেই শুরু থেকেই চোটে ভুগছেন নেইমার। ইউরোপীয় ফুটবলে যোগ দেওয়ার পর থেকে যতদিন মাঠে ছিলেন, ইনজুরি আক্রান্ত হয়ে তার চেয়ে বেশিদিন মাঠে বাইরে ছিলেন তিনি।
যদিও বার্সেলোনায় থাকাকালে ইনজুরির কবলে কম পড়েছেন। কিন্তু ফ্রান্সের ক্লাব পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নিয়মিত বিরতি যেন চোটে পড়েছেন তিনি। অফিসিয়াল হিসাব অনুযায়ী ইউরোপে খেলার সময় মোট ৩০ বার ইনজুরিতে পড়েন নেইমার। এর ২০ বারই আবার ফরাসি ক্লাবটিতে থাকা অবস্থায়। আর বার্সায় থাকাকালীন মোট ৯বার ইনজুরিতে পড়েন তিনি।
অবশ্য অন্য একটি হিসাব বলছে, সংখ্যাটা আরও বেশি। ট্রান্সফার মার্কেট বলছে, ২০১৪ থেকে ২০২৩-এই নয় বছরে মোট ৩৯ বার ইনজুরিতে পড়েন নেইমার। আর এ সময়ে ১০৮৭ দিনে ২০১টি ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি। এখন ইনজুরি থাকায় এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়বে।
সর্বশেষ গত ১৭ অক্টোবর উরুগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলতে নেমে চোটে পড়েন নেইমার। এরপর থেকে গত ১৯৪ দিন ধরে মাঠের বাইরে আছেন তিনি। এরই মধ্যে আল-হিলালের হয়ে ২৫ ম্যাচ মিস করেছেন নেইমার। সময়ের হিসাবে যা ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে মাঠের বাইরে।
ইউরোপীয় ক্যারিয়ারের প্রায় অর্ধেকটা সময় মাঠের বাইরে ছিলেন নেইমার। তবে সেই তুলনায় তার অর্জন কিন্তু কম নয়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ সর্বমোট ২৩টি ট্রফি জিতেছেন ৩১ বছর বয়সী এই ফুটবলার। নয় বছরে ৩৯বার ইনজুরিতে পড়া নেইমার ক্যারিয়ার কতদূর টেনে নিতে পারবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন